পাতা:সোনার চেয়ে দামী (দ্বিতীয় খণ্ড) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধনার যে শান্ত নিক্রিয় উদাসীনতার ভাব আরেকটা দুঃস্বপ্নের মত ঘনিয়ে এসেছিল তার জীবনে, দশজনের সম্পর্কে দুজনেরি মাথা ঘামাবার মাধ্যমে যেন তারও ঘোরটা কেটে গেছে আশ্চৰ্য্যজনক ভাবে । সাধনা বলে, শোভার বিয়ে ঠিক হল শেষ পৰ্য্যন্ত । রাখাল বলে, শুনলাম ওর দাদার কাছে । আপশোষ করছিল, বোনের জন্য শেষে বুড়ে বড় আনতে হল, লেখাপড়াও ভাল জানে না। কিন্তু উপায় কি, শোভার বয়সও তো বেড়ে যাচ্ছে । সাধন খুন্সী হয়ে বলে, তুমি শুনেছ সব ? শুনেছি বৈকি। তোমার কাছে শুনেছি, ওদের কাছেও শুনেছি । বাসন্তীর সঙ্গে কত কথা হয়েছিল শোভার বিয়ের সমস্যা নিয়ে, কত পরিষ্কার মনে হয়েছিল সমস্যাটা । বরটি কেমন সমস্যা তা নয়, সমস্যা মোটামুটি খাওয়াপরা জোটার। আজ আবার বিষম খটকা লেগেছে সাধনার মনে । প্ৰায় ষাট বছরের বুড়ে ? শোভা বিনা প্ৰতিবাদে মেনে নিয়েছে.। মন খারাপ হবার লক্ষণও দেখা যায় নি । অবুঝ কচি মেয়ে নয়। বুড়ে বরের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দেবার তথাকথিত ব্যাপারও নয়। শোভা শুধু মুখ ফুটে ‘না’ বললেই এ বিয়ে ভেঙ্গে যায়। কিন্তু “ন’ যে বলে নি । জিজ্ঞাসা করা হলে বরং নীরবে: সায় দিয়েছে ।