পাতা:সোনার চেয়ে দামী (দ্বিতীয় খণ্ড) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কল্পনা করাও অসম্ভব হয়ে গিয়েছে যে রাখাল নামক * - ষ এবং সাধনা নামক নারীটির মধ্যে সেইদিন কোন কার, “নামালিন্য হয়েছিল ! দু’জনে ন চিরদিনই একদেহ একপ্ৰাণ ! সকালে অবশ্য তারা স্বীকার করে নি। রাত্রে দু’জনের কোন বিবাদ ছিল না। গম্ভীর মুখেই রাখাল বাজার এনে দিয়েছে। এবং ঘূণায় বিদ্বেষে বিকৃত মুখ নিয়েই সাধনা রান্না করেছে। তবু তখন তাদের ঘূণা, রাগ বিতৃষ্ণা যেমন সত্য ছিল তেমনি সত্য ছিল ওসব নিয়েও সারাদিন ঘরসংসার চালিয়ে যাওয়া এবং রাত্রে সব সমস্যা পরদিনের জন্য ধামাচাপা দিয়ে রেখে অভ্যস্ত মিলনে একাত্ম হওয়া । এবার প্রায় পনের দিন দিনের বেলা তারা বিবাদ এবং পরস্পরকে ঘূণা করার পাটটা বজায় রেখে এসেছে বেশ খানিকটা নিয়মতান্ত্রিক ভদ্রতা ও উদারতার ঠাট দিয়ে, কিন্তু রাত্রে তারা জেগেছে ঘুমিয়েছে পরস্পরকে সম্পূর্ণ অগ্ৰাহ করে । খোকার জ্বর বলেই সাধনা যেন সেই অজুহাতে নতুন একটিও শয্যা সৃষ্টি করেছে। যুদ্ধের এমার্জেন্সিকে প্রাধান্য দিয়ে । মেঝেতে মশারি সমেত সে শয্যায় রাখালের যেন প্ৰবেশ নিষেধ । রাখালও যেন তাদের বহু বছরের পুরানো বাসর শয্যার খাটে শুয়ে সাধনার প্রবেশ নিষেধ ঘোষণা করে গাঢ় ঘুমের দুৰ্ভেদ্য বঁাধ রচনা করেছে প্ৰতি রাত্ৰে ।