পাতা:সোনার চেয়ে দামী (দ্বিতীয় খণ্ড) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পড়ার উপক্রম ঘটেছিল রাখালের, সেজন্য লজ্জার সীমা ছিল না রাজীবের। বেকার রাখাল সোজাসুজি পাঁচশো টাকা বেতনের চাকরী প্ৰত্যাখ্যান করে নিজেকে বঁচিয়েছিল বলে রাজীবও যেন বেঁচে গিয়েছিল। শ্ৰদ্ধার যেমন তার সীমা থাকে নি মানুষটার উপর, না জেনে না বুঝে ভাল করার নামে তাকে বিপদে ফেলতে গিয়েছিল বলে মরমে মরে থাকাও সে কাটিয়ে উঠতে পারে নি বহুদিন । চাকরী করে না দিতে পেরে থাক সাথে নিয়ে ব্যবসায়ে নামিয়ে দু’পয়সা আয়ের ব্যবস্থা সে যে তার করে দিতে পেরেছে, এজন্য তাই আনন্দের সীমা নেই রাজীবের । রাখাল কৃতজ্ঞভাবে কথা বললে তার খোচা খোচা দাড়িওলা গোল-গাল মুখে দাঁতন-ঘষা ঝকঝকে দাতের হাসি ফোটে, ছোট ছোট ধীর শান্ত চোখে ঘন ঘন খুন্সীর পলক ফেলা চাঞ্চল্য আসে। খাটি সহর এলাকায় ট্রাম চলা বাস চল রাস্তার ধারে ছিল রাজীবের আগের দোকান-আগের সেই বজাত পাটনার দীননাথের সঙ্গে । সে দোকান গেছে যাক, রাজীবের এখন আর আপশোষ নেই। কি বোকাই তাকে বানিয়েছিল হারামজাদা । সাধারণ দোকানদার সে, পাইকারি কিনে খুচরো বেচার সাধারণ ব্যবসায়ী, তাকে উঁচুদরের ব্যবসায়ী করার লোভ দেখিয়ে, বড়বাজার থেকে মাল কেনার বদলে বড়বাজার যেখান থেকে যেভাবে মাল কিনে আনে। সেখান থেকে সেইভাবে মাল আনিয়ে ব্যবসা ফ্যাপানোর ভাওত দিয়ে, ঘুষ দিয়ে যোগাড় করা কয়েকটা ওয়াগনের সরকারী পারমিট 9