পাতা:স্বদেশ ও সাহিত্য-শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য প্রবৃত্তিকে বুদ্ধির বার্টুখারায় ওজন করিয়া সাহিত্যের মূল্য নির্দেশ করিতে গেলে কি হয় তাহার একটা উদাহরণ দিতেছি। একটুখানি ব্যক্তিগত হইলেও আমাকে আপনার ক্ষমা করিবেন । ‘পল্লীসমাজ’ বলিয়া একটা গ্রন্থ আছে । তাহাতে বিধবা রমা রমেশকে ভালোবাসিয়াছে দেখিয়া সেদিন একজন প্রবীণ সাহিত্যিক ও সমালোচক, ‘সাহিত্যের স্বাস্থ্য-রক্ষা গ্রন্থে এইরূপে রমাকে তিরস্কার করিয়াছেন—“তুমি না অত্যন্ত বুদ্ধিমতী ? তুমি বুদ্ধিবলে পিতার জমিদারী শাসন করিয়া থাক, কিন্তু নিজের চিত্ত দমন করিতে পারিলে না ? তুমি এতদূর সতর্ক যে রমেশের চাকরের নামে পুলিশে ডায়রী করাইয়। রাখিলে, অথচ, তুমি শিবপূজা কর, তাহার সার্থকতা কোথায় ? তোমার এই পতন নিতান্তই ইচ্ছাকুত ।" এই অভিযোগের কি কোন উত্তর আছে, বিশেষ করিয়া সাহিত্যিক হইয়া সাহিত্যিককে মাস্তষে যখন এম্নি করিয়৷ জবাবদিহি করিতে চায় ? সেই ভাল-মন্দ, সেই উচিত-অতুচিতের প্রশ্ন ; শুধু এই উচিতঅঙ্কুচিতই রোহিণীকে গোবিন্দলালের লক্ষ্য করিয় দাড় করাইয়াছিল। যেখানে ভালবাসা উচিত নয়, সেখানে ভালবাসার অপরাধ যতই হউক, —বিশ্বাসহীর ঢের বড় অপরাধ মৃত্যুকালে হতভাগিনীর কপালে বঙ্কিমচন্দ্রকে দাগিয়া দিতেই হইল। এই অসঙ্গত জবরদস্তিই আধুনিক সাহিত্যিক স্বীকার করিয়া লইতে পারিতেছে না। ভাল-মন্দ সংসারে চিরদিনই আছে । হয়ত চিরদিনই থাকিবে । ভালকে ভাল, মন্দকে মন্দ সে-ও বলে ; মন্দের ওকালতী করিতে কোন সাহিত্যিকই কোন দিন সাহিত্যের আসরে অবতীর্ণ হয় না, কিন্তু ভুলাইয়া নীতিশিক্ষা দেওয়া ও সে আপনার কৰ্ত্তব্য বলিয়। জ্ঞান করে না । দুর্নীতিও সে S X o