পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Շ Հ স্বামীজীর বাণী ও রচনা কাক বা বক নাই।’ তিনি বিস্মিত হইলেন, তথাপি তাহাকে অপেক্ষা করিতে হইল। অবশেষে সেই নারী বাহিরে আসিলেন, যোগী তাহার পদতলে পড়িয়া বলিলেন, ‘মা, আপনি কিরূপে উহা জানিলেন ? তিনি বলিলেন, ‘বাবা, আমি তোমার যোগ-তপস্ত কিছুই জানি না। আমি একজন সামান্য নারী। তোমাকে অপেক্ষা করিতে বলিয়াছিলাম, কারণ আমার স্বামী পীড়িত, আমি তাহার সেবা করিতেছিলাম। সারা জীবন আমি কর্তব্য পালন করিবার চেষ্টা করিয়াছি। বিবাহের পূর্বে মাতাপিতার প্রতি কন্যার কর্তব্য পালন করিয়াছি। এখন বিবাহিত হইয়া স্বামীর প্রতি আমার কর্তব্য করিতেছি। ইহাই আমার যোগাভ্যাস। এই কর্তব্য করিয়াই আমার জ্ঞানচক্ষু খুলিয়াছে, তাহাতেই আমি তোমার মনোভাব ও অরণ্যে তোমার কৃত সমুদয় ব্যাপার জানিতে পারিয়াছি। ইহা হইতে উচ্চতর কিছু জানিতে চাও তো অমুক নগরের বাজারে যাও, সেখানে এক ব্যাধকে দেখিতে পাইবে । তিনি তোমাকে এমন উপদেশ দিবেন, যাহা শিক্ষা করিলে তোমার পরম আনন্দ হইবে।” সন্ন্যাসী ভাবিলেন, “ঐ নগরে একটা ব্যাধের কাছে কেন যাইব ? কিন্তু ষে ব্যাপার এখানে দেখিলেন, তাহতেই তাহার কিঞ্চিৎ চৈতন্তোদয় হইয়াছিল, স্বতরাং তিনি পূর্বোক্ত উদ্দেণ্ডে যাত্রা করিলেন। নগরের নিকটে আসিয়া বাজার দেখিতে পাইলেন। সেখানে দূর হইতে দেখিলেন, এক অতি স্থূলকায় ব্যাধ বসিয়া বড় ছুরি লইয়া মাংস কাটিতেছে, নানা লোকের সহিত কথা বলিতেছে ও কেনা-বেচা করিতেছে। যুবক ভাবিলেন, ‘হায় ভগবান, রক্ষা কর! এই লোকের নিকট আমাকে শিখিতে হইবে । এ তো দেখিতেছি একটা পিশাচের অবতার ' ইতিমধ্যে ঐ লোকটি চোখ তুলিয়। চাহিয়া বলিল, “স্বামিন! সেই মহিলাটি কি আপনাকে এখানে পাঠাইয়াছেন ? আমার বেচা-কেনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুগ্রহ করিয়া একটু বন্ধন।' সন্ন্যাসী ভাবিলেন, ‘এখানে আমার কি হইবে ? যাহা হউক, তিনি উপবেশন করিলেন। ব্যাধ নিজ কার্ষ করিতে লাগিল। কাজ শেষ হইলে পর সে টাকাকড়ি সব লইয়া সন্ন্যাসীকে বলিল, “জাস্কন, মহাশয়, আমার বাটতে আন্ধন।' গৃহে উপনীত হইলে ব্যাধ তাহাকে একটি আসন দিয়া বলিল, ‘একটু অপেক্ষা করুন। তারপর বাটীর ভিতরে গিয়া তাহার