পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૭૯:ર স্বামীজীর ৰাণী ও রচনা প্রকার, যথা—প্রকাশ, কার্ব ও জড়তা। ইহাদিগকেই অন্ত ভাষায় লঙ্ক, রজঃ ও তমঃ বলে। সমুদয় প্রকৃতির উদ্দেশু কি ? উদ্বেগু-বাহাতে পুরুষ সমুদয় ভোগ করিয়া অভিজ্ঞতা অর্জন করিতে পারেন । পুরুষ যেন আপনার মহান ঐশ্বরিক ভাব বিশ্বত হইয়াছেন । এ-বিষয়ে একটি বড় সুন্দর আখ্যায়িকা আছে। কোন সময়ে দেবরাজ ইজ শূকর হইয়া কদমের ভিতর বাস করিতেন, তাহার অবগু একটি শূকরী ছিল, সেই শূকর হইতে র্তাহার অনেকগুলি শাবক হইয়াছিল। দেবতারা তাহার দুরবস্থ। দর্শন করিয়া র্তাহার নিকট আসিয়া বলিলেন, “আপনি দেবরাজ, দেবতার। আপনার শাসনে বাস করেন ; আপনি এখানে কেন ? কিন্তু ইন্দ্র উত্তর দিলেন, “আমি বেশ আছি, কিছু ভাবিও না ; এই শূকরী ও শাবকগুলি যতদিন আছে, ততদিন স্বৰ্গাদি কিছুই প্রার্থনা করি না। তখন সেই দেবগণ কি করিবেন ভাবিয়া কিছুই স্থির করিতে পারিলেন না। কিছুদিন পরে তাহারা স্থির করিলেন, একে একে শাবকগুলি সব মারিয়া ফেলিতে হুইবে । এইরূপে একটি একটি করিয়া শাবকগুলি সব নিহত হইলে দেবগণ অবশেষে সেই শূকরীকেও মারিয়া ফেলিলেন । তখন ইন্দ্র কাতর হইয়া বিলাপ করিতে লাগিলেন ; দেবতার ইন্দ্রের শুকরদেহটি চিরিয়া ফেলিলেন। তখন ইন্দ্র সেই শূকরদেহ হইতে নির্গত হইয়। হাসিতে লাগিলেন এবং ভাবিতে লাগিলেন, “কি ভয়ঙ্কর স্বপ্ন দেখিতেছিলাম! আমি দেবরাজ, আমি এই শূকরজন্মকেই একমাত্র জন্ম বলিয়া মনে করিতেছিলাম ; শুধু তাই নয়, সমগ্র জগৎ শুকরদেহ ধারণ করুক, —আমি এইরূপ ইচ্ছাও করিতেছিলাম। পুরুষও এইভাবে প্রকৃতির সহিত মিলিত হইয়া বিশ্বত হন যে, তিনি শুদ্ধস্বভাব ও অনস্তস্বরূপ । পুরুষকে ‘অস্তিত্ববান বলিতে পারা যায় না, কারণ পুরুষ স্বয়ং অস্তিত্বস্বরূপ। পুরুষ বা আত্মাকে ‘জ্ঞানী’ বলিতে পারা যায় না, কারণ আত্মা স্বয়ং জ্ঞানস্বরূপ। তাহাকে ‘প্রেমসম্পন্ন’ বলিতে পারা যায় না, কারণ তিনি স্বয়ং প্রেমস্বরূপ। আত্মা অস্তিত্ববান, জ্ঞানযুক্ত অথবা প্রেমময়—এরূপ বলা ভুল। প্রেম, জ্ঞান ও অস্তিত্ব পুরুষের গুণ নয়, ঐগুলি তাহার স্বরূপ। যখন ঐগুলি কোন বস্তুর উপর প্রতিবিম্বিত হয়, তখন ঐগুলিকে সেই বস্তুর গুণ বলিতে পারা যায়। কিন্তু এগুলি পুরুষের গুণ নয়, এগুলি সেই মহান আত্মায়—আমন্ত পুরুষের স্বরূপ—র্তাহার জন্ম নাই, মৃত্যু নাই, তিনি নিজ মহিমায় বিরাজ