পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৪০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধন-পাদ סוף ס ধারণক্ষ্ম চ যোগ্যতা মনসঃ ॥ ৫৩ ৷ —( তাহা হইতেই ) ‘ধারণা বিষয়ে মনের যোগ্যতা হয়। এই আবরণ চলিয়া গেলে আমরা মনকে একাগ্র করিতে সমর্থ হই । স্বস্ববিষয়াসম্প্রয়োগে চিত্ত-স্বরূপামুকার ইবেন্দ্রিয়াণাং প্রত্যাহারঃ ॥৫৪৷৷ —যখন ইন্দ্রিয়গণ তাহাদের নিজ নিজ বিষয় পরিত্যাগ করিয়া যেন চিত্তের স্বরূপ গ্রহণ করে, তখন তাহাকে ‘প্রত্যাহার’ বলা যায়। এই ইন্দ্রিয়গুলি মনেরই বিভিন্ন অবস্থা মাত্র। মনে কর, অামি একখানি পুস্তক দেখিতেছি । বাস্তবিক ঐ পুস্তকাকৃতি বাইরে নাই, উহা মনেই অবস্থিত। বাহিরের কোন-কিছু ঐ আকৃতি জাগাইয়া দেয় মাত্র ; বাস্তবিক রূপ বা আকৃতি চিত্তেই আছে। এই ইন্দ্রিয়গুলি, তাহদের সম্মুখে যাহা আসিতেছে, তাহারই সহিত মিশিয়া গিয়া তাহারই আকার গ্রহণ করিতেছে। যদি তুমি মনের এই-সকল ভিন্ন ভিন্ন আকৃতি-ধারণ নিবারণ করিতে পারে, তবে তোমার মন শাস্ত হইবে এবং ইন্দ্রিয়গুলিও শাস্ত হইবে। ইহাকেই ‘প্রত্যাহার’ বলে। ততঃ পরমাবশ্বাতেন্দ্রিয়াণাম ॥ ৫৫ ॥ —তাহা ( প্রত্যাহার ) হইতেই ইন্দ্রিয়গণ সম্পূর্ণরূপে বশীভূত হইয়া থাকে । যখন যোগী ইন্দ্রিয়গণের এইরূপ বহির্বস্তুর আকৃতি-ধারণ নিবারণ করিতে পারেন ও মনের সহিত উহাদিগকে এক করিয়া ধারণ করিতে কৃতকার্য হন, তখনই ইন্দ্রিয়গণ সম্পূর্ণরূপে জিত হইয়া থাকে। আর যখন ইন্দ্রিয়গণ সর্বতেভাবে বশীভূত হয়, তখনই প্রত্যেকটি স্বায়ু ও মাংসপেশী বশে আসিয়া থাকে, কারণ ইন্দ্রিয়গণই সর্বপ্রকার অনুভূতি ও কার্যের কেন্দ্রস্বরূপ । এই ইন্দ্রিয়গণ জ্ঞানেন্দ্রিয় ও কর্মেন্দ্রিয়—এই দুই ভাগে বিভক্ত। স্থতরাং যখন ইন্দ্রিয়গণ সংযত ইষ্টবে, তখন যোগী সর্বপ্রকার ভাব ও কার্যকে জয় করিতে পরিবেন , সমগ্র শরীরটিই তাহার বশীভূত হইবে। এইরূপ অবস্থালাভ হইলেই মাহুষ দেহধারণের আনন্দ অনুভব করে। তখনই সে ঠিক ঠিক বলিতে পারে, “জন্মিয়াছিলাম বলিয়া আমি সুখী। যখন ইন্দ্রিয়গণের উপর এইরূপ শক্তিলাভ হয়, তখনই বুঝিতে পারা যায়, বাস্তবিক এই শরীর অতি আশ্চর্য পদার্থ। ।