পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (প্রথম খণ্ড).pdf/৪২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\95) e স্বামীজীর বাণী ও রচনা এমন কি দেবগণকৃত প্রলোভনও তিনি অতিক্রম করিতে পারেন । যখন যোগ এই-সকল অদ্ভূত ক্ষমতা লাভ করিয়াও পরিত্যাগ করেন, তখনই তিনি সেট চরম লক্ষ্যে উপনীত হন। বাস্তবিক এই শক্তিগুলি কি ? শুধু বিকার মাত্র। স্বপ্ন অপেক্ষ এগুলি কোন অংশে বড় নয়। সর্বশক্তিমত্তাও স্বপ্নতুল্য। উই৷ কেবল মনের উপর নির্ভর করে। যতক্ষণ মনের অস্তিত্ব থাকে, ততক্ষণই সর্বশক্তিমত্তা বুঝা যাইতে পারে, কিন্তু আমাদের লক্ষ্য মনকেও অতিক্রম করিয়া। স্থাস্থ্যপনিমন্ত্রণে সঙ্গন্ময়াকরণং পুনরলিষ্টপ্রসঙ্গৎ ॥ ৫২৷৷ —দেবগণ প্রলোভিত করিলেও তাহাতে আসক্ত হওয়া বা আনন্দবোধ ( স্ময় ) করা উচিত নয়, কারণ তাহাতে অনিষ্টের আশঙ্কা আছে । আরও অনেক বিঘ্ন আছে। দেবতা ও অন্যেরা যোগীকে প্রলুব্ধ করিডে আসেন ; তাহার ইচ্ছা করেন না যে, কেহ সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হইয়া যায়। আমরা যেমন ঈর্ষাপরায়ণ, দেবতারাও সেইরূপ, বরং কখন কখন আমাদের অপেক্ষা অধিক । পাছে পদভ্ৰষ্ট হন, সেই ভয়ে তাহার। অতিশয় ভীত। যে-সকল যোগী সম্পূর্ণ সিদ্ধ হইতে পারেন না, মৃত্যুর পর তাহারাই দেবতা হন । র্তাহারা সোজা পথ ছাড়িয়া পাশের এক গলিপথে চলিয়া যান এবং এই ক্ষমতাগুলি লাভ করেন । র্তাহীদের আবার জন্মাইতে হইবে, কিন্তু যিনি এতদূর শক্তিসম্পন্ন যে, এই প্রলোভনগুলিও প্রতিরোধ করিতে পারেন, তিনি একেবারে লক্ষ্যে পৌছিতে পারেন, তিনি মুক্ত হইয়া যান। ক্ষণতৎক্রময়োঃ সংযমাদ্বিবেকজং জ্ঞানমূ৷ ৫৩ ৷৷ —ক্ষণ ও তাহার পূর্বাপর ভাবগুলির উপর সংযম প্রয়োগ করিলে বিবেকজ জ্ঞান উৎপন্ন হয়। এই দেবতা, স্বর্গ ও শক্তিগুলি এড়াইবার উপায় কি ? বিবেকবলে ৰখন সদসংবিচারশক্তি হয়, তখনই এই-সকল বিঘ্ন চলিয়া যাইবে । যাহতে বিবেকঞ্জান দৃঢ় হইতে পারে, এই উদ্দেশ্যে এই সংযমের উপদেশ প্রদত্ত হইল। ক্ষণ অর্থাৎ কালের স্বগ্নতম অংশের এবং উহার পূর্বাপর ভাবগুলির উপর সংযমের দ্বারা ইহা হইয়া থাকে।