পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○ o切ア স্বামীজীর বাণী ও রচনা দাওয়৷ শেষ হ’ল, আর এক প্রকার আকৃতি-প্রকৃতি, আহার-বিহার, পরিচ্ছদ, আচার-ব্যবহার আরম্ভ হ’ল—ইউরোপ এল। শুধু তাই নয়—নামা বর্ণ, জাতি, সভ্যতা, বিদ্যা ও আচারের বহুশতাব্দীব্যাপী যে মহা-সংমিশ্রণের ফলস্বরূপ এই আধুনিক সভ্যতা, সে সংমিশ্রণের মহাকেন্দ্র এইখানে। যে ধর্ম, যে বিদ্যা, যে সভ্যতা, যে মহাবীর্য আজ ভূমণ্ডলে পরিব্যাপ্ত হয়েছে, এই ভূমধ্যসাগরের চতুষ্পাশ্বই তার জন্মভূমি। ঐ দক্ষিণে— ভাস্কর্যবিদ্যার অাকের, বহুধনধান্তপ্রস্থ অতি প্রাচীন মিসর ; পূর্বে ফিনিসিয়ান, ফিলিস্ট্রিন, য়াহুদী, মহাবল বাবিল, আসীর ও ইরানী সভ্যতার প্রাচীন রঙ্গভূমি—এশিয়া মাইনর ; উত্তরে —সর্বাশ্চর্যময় গ্রীক জাতির প্রাচীন লীলাক্ষেত্র । স্বামীজী ! দেশ নদী পাহাড় সমুদ্রের কথা তো অনেক শুনলে, এখন প্রাচীন কাহিনী কিছু শোন। এ প্রাচীন কাহিনী বড় অদ্ভূত। গল্প নয়— সত্য ; মানবজাতির যথার্থ ইতিহাস। এই সকল প্রাচীন দেশ কালসাগরে প্রায় লয় হয়েছিল। যা কিছু লোকে জানত, তা প্রায় প্রাচীন যবন ঐতিহাসিকের অদ্ভূত গল্পপূর্ণ প্রবন্ধ অথবা বাইবেল-নামক য়াহুদী পুরাণের অত্যদ্ভুত বর্ণনা মাত্র। এখন পুরানো পাথর, বাড়ী, ঘর, টালিতে লেখা পুথি, আর ভাষাবিশ্লেষ শত মুখে গল্প করছে। এ গল্প এখন সবে আরম্ভ হয়েছে, এখনই কত আশ্চর্য কথা বেরিয়ে পড়েছে, পরে কি বেরুবে কে জানে ? দেশ-দেশাস্তরের মহা মহা পণ্ডিত দিনরাত এক টুকরো শিলালেখ বা ভাঙা বাসন বা একটা বাড়ী বা একখান টালি নিয়ে মাথা ঘামাচ্চেন, আর সেকালের লুপ্ত বার্তা বার করছেন । যখন মুসলমান নেতা ওসমান কনস্টাণ্টিনোপল দখল করলে, সমস্ত পূর্ব ইউরোপে ইসলামের ধ্বজা সগর্বে উড়তে লাগলো, তখন প্রাচীন গ্রীকদের যে সকল পুস্তক, বিদ্যাবুদ্ধি তাদের নিবীর্য বংশধরদের কাছে লুকানো ছিল, তা পশ্চিম-ইউরোপে পল্লায়মান গ্রীকদের সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে প’ড়ল । গ্রীকেরা রোমের বহুকাল পদানত হয়েও বিদ্যা-বুদ্ধিতে রোমকদের গুরু ছিল। এমন কি, গ্রীকরা ক্রিশান হওয়ায় এবং গ্রীক ভাষায় ক্রিস্টানদের ধর্ম-গ্রন্থ লিখিত হওয়ায় সমগ্র রোমক সাম্রাজ্যে ক্রিশ্চান ধর্মের বিজয় হয়। কিন্তু প্রাচীন গ্রীক, যাদের আমরা যবন বলি, যারা ইউরোপী সভ্যতার আদগুরু, তাদের সভ্যতার চরম উত্থান ক্রিশচীনদের অনেক পূর্বে। ক্রিশান হয়ে পর্যন্ত তাদের