পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

令88 স্বামীজীর বাণী ও রচনা অধঃপতন হইতে বর্তমান কাল পর্যস্ত, এ প্রকার শক্তিমান ও সর্বব্যাপী শাসনযন্ত্র অস্মদেশে পরিচালিত হয় নাই। বৈশ্বাধিকারের যে চেষ্টায়, এক প্রাস্তের পণ্যদ্রব্য অন্য প্রাস্তে উপনীত হইতেছে, সেই চেষ্টারই ফলে দেশ-দেশাস্তরের ভাবরাশি বলপূর্বক ভারতের অস্থিমজ্জায় প্রবেশ করিতেছে। এই সকল ভাবের মধ্যে কতকগুলি অতি কল্যাণকর, কতকগুলি অমঙ্গলস্বরূপ, আর কতকগুলি পরদেশবাসীর—এ দেশের যথার্থ কল্যাণনির্ধারণে অজ্ঞতার পরিচায়ক । কিন্তু গুণদেণষরাশি ভেদ করিয়া সকল ভবিষ্যৎ মঙ্গলের প্রবল লিঙ্গ’ দেখা যাইতেছে যে, এই বিজাতীয় ও প্রাচীন স্বজাতীয় ভাবসংঘর্যে অল্পে অল্পে দীর্ঘক্ষপ্ত জাতি বিনিদ্র হইতেছে। ভুল করুক, ক্ষতি নাই ; সকল কার্যেই ভ্রমপ্রমাদ আমাদের একমাত্র শিক্ষক। যে ভ্রমে পতিত হয়, ঋতপথ তাহারই প্রাপ্য। বৃক্ষ ভুল করে না, প্রস্তরখণ্ডও ভ্রমে পতিত হয় না, পশুকুলে নিয়মের বিপরীতচরণ অত্যন্ত্রই দৃষ্ট হয় ; কিন্তু ভূদেবের উৎপত্তি ভ্রম-প্রমাদপূর্ণ নরকুলেই। দস্তধাবন হইতে মৃত্যু পর্যন্ত সমস্ত কর্ম, নিদ্রাভঙ্গ হইতে শয্যাশ্রয় পর্যন্ত সমস্ত চিন্তা—যদি অপরে আমাদের জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নির্ধারিত করিয়া দেয় এবং রাজশক্তির পেষণে ঐ সকল নিয়মের বজ্রবন্ধনে আমাদের বেষ্টিত করে, তাহা হইলে আমাদের অপর চিন্তা করিবার কি থাকে ? মননশীল বলিয়াই না আমরা মহুয়া, মনীষী, মুনি ? চিন্তাশীলতার লোপের সঙ্গে সঙ্গে তমো গুণের প্রাদুর্ভাব, জড়ত্বের আগমন । এখনও প্রত্যেক ধর্মনেতা, সমাজনেতা সমাজের জন্ত নিয়ম করিবার জন্য ব্যস্ত !!! দেশে কি নিয়মের অভাব ? নিয়মের পেষণে যে সর্বনাশ উপস্থিত, কে বুঝে ? সম্পূর্ণ স্বাধীন স্বেচ্ছাচারী রাজার অধীনে বিজিত জাতি বিশেষ ঘৃণার পাত্র হয় না। অপ্রতিহতশক্তি সম্রাটের সকল প্রজারই সমান অধিকার অর্থাৎ কোন প্রজারই রাজশক্তির নিয়মনে কিছুমাত্র অধিকার নাই। সে স্থলে জাত্যভিমানজনিত বিশেষাধিকার অল্পই থাকে। কিন্তু যেখানে প্রজানিয়মিত রাজা রা প্রজাতন্ত্র বিজিত জাতির শাসন করে, সে স্থানে বিজয়ী ও বিজিতের মধ্যে অতি বিস্তীর্ণ ব্যবধান নির্মিত হয়, এবং যে শক্তি বিজিতদিগের কল্যাণে সম্পূর্ণ নিযুক্ত হইলে অত্যন্ত্রকালে বিজিত জাতির বহুকল্যাণসাধনে সমর্থ, সে হি