পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বর্তমান ভারত $ 8 ት একদিকে নব্যভারত-ভারতী বলিতেছেন—পতিপত্নী-নির্বাচনে আমাদের সম্পূর্ণ স্বাধীনতা হওয়া উচিত, কারণ যে বিবাহে আমাদের সমস্ত ভবিষ্যৎ জীবনের সুখ-দুঃখ, তাহা আমরা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হইয়া নির্বাচন করিব ; অপরদিকে প্রাচীন ভারত আদেশ করিতেছেন—বিবাহ ইন্দ্রিয়সুখের জন্য নহে, প্রজোৎপাদনের জন্য। ইহাই এ দেশের ধারণা। প্রজোংপাদন দ্বারা সমাজের ভাবী মঙ্গলামঙ্গলের তুমি ভাগী, অতএব যে প্রণালীতে বিবাহ করিলে সমাজের সর্বাপেক্ষ কল্যাণ সম্ভব, তাহাই সমাজে প্রচলিত ; তুমি বহুজনের হিতের জন্য নিজের সুখভোগেচ্ছ ত্যাগ কর । একদিকে নব্য ভারত বলিতেছেন—পাশ্চাত্য ভাব, ভাষা, আহার, পরিচ্ছদ ও আচার অবলম্বন করিলেই আমরা পাশ্চাত্য জাতিদের ন্যায় বলবীর্যসম্পন্ন হইব ; অপরদিকে প্রাচীন ভারত বলিতেছেন—মূৰ্খ! অনুকরণ দ্বারা পরের ভাব আপনার হয় না, অর্জন না করিলে কোন বস্তুই নিজের হয় না; সিংহচর্মে আচ্ছাদিত হইলেই কি গর্দভ সিংহ হয় ? একদিকে নব্যভারত বলিতেছেন—পাশ্চাত্য জাতিরা যাহা করে তাহাই ভাল ; ভাল না হইলে উহার এত প্রবল কি প্রকারে হইল ? অপরদিকে প্রাচীন ভারত বলিতেছেন—বিদ্যুতের আলোক অতি প্রবল, কিন্তু ক্ষণস্থায়ী ; বালক, তোমার চক্ষু প্রতিহত হইতেছে, সাবধান ! তবে কি আমাদের পাশ্চাত্য জগৎ হইতে শিখিবার কিছুই নাই ? আমাদের কি চেষ্টা-যত্ব করিবার কোন প্রয়োজন নাই ? আমরা কি সম্পূর্ণ? আমাদের সমাজ কি সর্বতোভাবে নিশ্ছিদ্র ? শিখিবার অনেক আছে, যত্ন আমরণ করিতে হইবে, যত্বই মানবজীবনের উদ্দেশ্য। শ্রীরামকৃষ্ণ বলিতেন, যতদিন বঁচি, ততদিন শিথি । ষে ব্যক্তি বা যে সমাজের শিখিবার কিছুই নাই, তাহা মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছে। [ শিখিবার ] আছে—কিন্তু ভয়ও আছে। কোনও অল্পবুদ্ধি বালক, শ্রীরামকৃষ্ণের সমক্ষে সর্বদাই শাস্ত্রের নিন্দ করিত। একদা সে গীতার অত্যন্ত প্রশংসা করে। তাহাতে শ্রীরামকৃষ্ণ বলেন, ‘বুঝি, কোনও ইংরেজ পণ্ডিত গীতার প্রশংসা করিয়াছে, তাহাতে এও প্রশংসা করিল।’ হে ভারত, ইহাই প্রবল বিভীষিকা। পাশ্চাত্য-অনুকরণ-মোহ এমনই . প্রবল হইতেছে যে, ভালমনের জ্ঞান আর বুদ্ধি বিচার শাস্ত্র [ বা বিবেকের