পাতা:স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা (ষষ্ঠ খণ্ড).pdf/৩০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পত্রাবলী
৪২১

বিশেষভাবে তৃপ্তিকর, কিন্তু প্রশংসাবাহুল্যের জন্য সেগুলি তোমাকে পাঠাব না। তারা আমার সম্বন্ধে ‘অপূর্ব', 'অদ্ভূত’, ‘স্ববিখ্যাত’ এইসব নানা আজে-বাজে কথা বলেছে, কিন্তু তারা বহন ক’রে এনেছে সমগ্র জাতির হৃদয়ের কৃতজ্ঞতা। এখন আমি লোকের কথা আর গ্রাহ্য করি না, আমার নিজের দেশের লোক বললেও না—কেবল একটি কথা। আমার বুড়ী মা এখনও বেঁচে আছেন, সারা জীবন তিনি অসীম কষ্ট পেয়েছেন, সে সব সত্ত্বেও মানুষ আর ভগবানের সেবায় আমাকে উৎসর্গ করবার বেদন তিনি সহ্য করেছেন। কিন্তু তার শ্রেষ্ঠ আশার, তার সবচেয়ে ভালবাসার যে ছেলেটিকে তিনি দান করেছেন, সে দূরদেশে গিয়ে—কলকাতায় মজুমদার যেমন রটাচ্ছে তেমনিভাবে—জঘন্য নোংরা জীবন যাপন করছে, এ সংবাদ তাকে একেবারে শেষ ক’রে দেবে। কিন্তু প্রভু মহান, তার সস্তানের ক্ষতি কেউ করতে পারে না।

 ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে—আমি না চাইতেই। ঐ সম্পাদকটি কে জানো?—আমাদের দেশের অন্যতম প্রধান সংবাদপত্রের সম্পাদক, যিনি আমার অত প্রশংসা করেছেন এবং আমেরিকায় আমি হিন্দুধর্মের পক্ষ-সমর্থনে এসেছি বলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, তিনি মজুমদারের সম্পর্কিত ভাই! হতভাগ্য মজুমদার। ঈর্ষায় জ্বলে মিথ্যা কথা ব’লে নিজের উদ্দেশ্যেরই ক্ষতি করলে। প্রভু জানেন আমি আত্মসমর্থনের কিছুমাত্র চেষ্টা করিনি।

 ‘ফোরাম'-এ মি: গান্ধীর রচনা এর পূর্বেই আমি পড়েছি। যদি গতমাসের *রিভিউ অফ রিভিউজ’টা পাও, তাহলে সেটা মায়ের কাছে পাঠ ক’রো। তাতে আফিং-সংক্রান্ত ব্যাপারে ভারতীয় চরিত্র সম্পর্কে বৃটিশ ভারতের জনৈক সর্বোচ্চ রাজকর্মচারীর অভিমত পাবে। তিনি ইংরেজদের সঙ্গে হিন্দুদের তুলনা ক’রে হিন্দুদের আকাশে তুলেছেন। আমাদের জাতির একজন চরমতম স্যার ঐ স্তর লেপেল্ গ্রিফিন্‌! তাঁর এই মত-পরিবর্তনের কারণ কি?

 বস্টনে মিসেস ব্রীড-এর বাড়ীতে আমার সময় কেটেছে চমৎকার। অধ্যাপক রাইটের সঙ্গেও সাক্ষাৎ হয়েছে। আমি আবার বস্টনে যাচ্ছি। দরজীরা আমার নূতন গাউন তৈরী করছে। কেম্ব্রিজ ইউনিভার্সিটিতে (হার্ভার্ড) বক্তৃতা দিতে যাব। সেখানে অধ্যাপক রাইটের অতিথি হবো। বস্টনের কাগজপত্রে আমাকে বিরাট ক’রে স্বাগত জানিয়েছে।