পাতা:হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রাতারাতি

 চাটুজ্যে। ঠিক, তিন বারই ছুঁচো বলেছে বটে। তাতে এই বাবাজীরা সকলেই বড় মর্মাহত হয়েছেন। আমরা ছেলেবেলায় বাপ-জ্যাঠার গালাগাল বিস্তর খেয়েছি, সোনাপারা মুখ ক’রে সমস্ত সয়েছি। কিন্তু সে দিন আর নেই মশায়। তখন এই কলকাতায় ঘোড়ার ট্রাম চ’লত, ছেলেরা গোঁপ রাখত, কোটের ওপর উড়ুনি ওড়াত, মেয়েরা নোলক পরত আর নাইবার ঘরে লুকিয়ে গান গাইত, গবরমেণ্টকে লোকে তখন বলত সদাশয় সরকার বাহাদুর। যাক সে কথা। এখন আমি বলি কি—বাপ যদি ছেলেকে ছুঁচো ব’লেই থাকে তাতে ক্ষতিটা কি। ছুঁচো ভগবানের সৃষ্ট জীব, বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে তার একটা মহৎ উদ্দেশ্য নিশ্চয়ই আছে। ছুঁচো তুচ্ছ প্রাণী নয়, ইঁদুরের চাইতে তার স্বভাব ভাল, মুখশ্রী ভাল, বুদ্ধিও বেশী। ইঁদুর সম্বন্ধে কবি বলেছেন— কাঠ কাটে বস্ত্র কাটে কাটে সমুদয়, কিন্তু ছুঁচোর এ বদনাম কেউ দিতে পারবে না। কি বলেন মা-লক্ষ্মী?

 জিগীষা দেবী ভ্রূ কুঞ্চিত করিয়া বলিলেন—‘তরুণের দলে আপনি কেন?’

 চাটুজ্যে মহাশয় একটু চিন্তা করিয়া উত্তর দিলেন— ‘সে একটা সমস্যা বটে, কিন্তু কথা হচ্ছে কি জানেন, আমি একজন প্রবীণ তরুণ।’

৯৯