পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আশ্রমপীড়া

 নবকান্ত। আমি বলছিলুম, উভয় পক্ষের যদি— আহা শোনো না― উভয় পক্ষের―

 নরোত্তম। ও-সব কথা আমার জানা নেই, উভয় পক্ষের কথা শুনলে আমার ভারি গোল বেধে যায়, মাথা ঘুরতে থাকে।

 নবকান্ত। তুমি আমার কথা না শুনেই যে ভয় পাচ্ছ, আমি যা বলছি তা তর্কের কথা নয়― হৃদয়ের কথা, সহজ কথা।

 নরোত্তম। কিন্তু ওই সহজ কথাতেই সাড়ে চারটে বেজে যাবে― আমায় ছাড়ো।

 নবকান্ত। আচ্ছা দেখো, দশ মিনিটের বেশি লাগবে না― ঘড়ি ধরে থাকো, আমি বলে যাই।

 নরোত্তম। (সকাতরে) নবকান্ত, কেন তোমরা সকলে আমাকে নিয়েই পড়েছ? ও-ঘরে হরি আছে, নবীন আছে, তাদের কাছে তো ঘেঁষ না। সেদিন ঠিক এমনি সময়ে হৃদয়ের রহস্যের কথা পাড়লে সাড়ে দুপুর বেজে গেল— সাহেবের কাছে জরিমানা দিতে হল। আবার আজও সেই হৃদয়ের রহস্য। গরিবের চাকরিটি গেলে হৃদয়ের রহস্য আমার কোন্ কাজে লাগবে!

প্রস্থানোদ্যম

 নবকান্ত। (ধরিয়া) রাগ করলে ভাই?

 নয়োত্তম। না, রাগের কথা হচ্ছে না। আপিসের বেলা হল তাই তাড়াতাড়ি করছি।

প্রস্থানোদ্যম

 নবকান্ত। (ধরিয়া) না ভাই, তুমি রাগ করছ।

৭১