حياته ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর Ridd না, অনেক বিষয়ে তাহারা খাটি মানুষ; আমাদের মনুষ্যত্ব তাহাদের নিকট নিম্প্রভ ও মলিন। যে পুরুষকারে পুরুষের পৌরুষ, সাধারণ ইউরোপীয়ের চরিত্রে যাহা বর্ত্তমান, সাধারণ পরিমাণে বর্ত্তমান ছিল। বিদ্যাসাগরের বাল্যজীবনটা দুঃখের সহিত সংগ্রাম করিতে অতিবাহিত হইয়াছিল। শুধু বাল্যজীবন কেন, তাহার সমগ্র জীবনকেই নিজের জন্য না হউক, পরের জন্য, সংগ্রাম বলিয়া নির্দেশ করা যাইতে পারে। এই সংগ্রাম তাহার চরিত্রগঠনে অনেকটা আনুকুল্য করিয়াছিল, সন্দেহ নাই; কিন্তু, পিতৃপিতামহ হইতে র্তাহার ধাতুতে ও মজ্জাতে ও শোণিতে এমন একটা পদার্থ তিনি পাইয়াছিলেন, যাহাতে সমুদয় বিপত্তি ভিন্ন করিয়া তিনি বীরের মত সেই রণক্ষেত্রে দাড়াইতে সমর্থ হইয়াছিলেন। দুঃখ অনেকেরই ভাগ্যে ঘটে; জীবনের বন্ধুর পথ অনেকের পক্ষেই কণ্টকসমাবেশে আরও দুৰ্গম। কিন্তু এইরূপে সেই কঁাটাগুলিকে ছাটিয়া দলিয়া চলিয়া যাইতে অল্প লোককেই দেখা যায়। বাঙ্গালীর মধ্যে এমন দৃষ্টান্ত প্রকৃতই বিরল। অথচ আশ্চর্য্য এই, এত প্রভেদ সত্ত্বেও বিদ্যাসাগর খাটি বাঙ্গালী ছিলেন। তিনি খাটি বাঙ্গালীর ঘরে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন; তাহার বাল্যজীবনে ইউরোপীয় প্রভাব তিনি কিছুই অনুভব করেন নাই। তিনি যে স্থানে র্যাহাদের মধ্যে জন্মগ্রহণ করেন, সে স্থানে তঁহাদের মধ্যে পাশ্চাত্য ভাবের প্রভাব তখন পর্য্যন্ত একেবারেই প্রবেশলাভ করে নাই। পরজীবনে তিনি পাশ্চাত্য শিক্ষা ও পাশ্চাত্য দীক্ষা অনেকটা পাইয়াছিলেন, অনেক পাশ্চাত্যের স্পর্শে আসিয়াছিলেন, পাশ্চাত্য চরিত্রে অনুকরণের