মনসা-মঙ্গল—কেতকাদাস-১৬৫০ খৃষ্টাব্দ। রাজকৃষ্ণ দ্বিজে (১) কয় নারীগণে জয় জয় গঙ্গাদাস সেনে স্বরচন॥ কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ। কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ অনুমান ১৬৫০ খৃষ্টাব্দে মনসামঙ্গল রচনা করেন। ইনি কায়স্থ-বংশোদ্ভব ছিলেন। কেতকাদাস উপাধি, ক্ষেমানন্দই প্রকৃত নাম। ইহার বিশেষ বিবরণ বঙ্গভাষা ও সাহিত্যের (তৃতীয় সংস্করণ ) ৪৭০ পৃষ্ঠায় দ্রষ্টব্য। বঙ্গদেশে এই মনসার ভাসান বটতলার রূপায় এবং অসামান্ত কবিত্বগুণে সর্ব্বত্র প্রচারিত। যতেক বর্যাতীগণ (২) হরিষ অন্তর। নিশিযোগে পাইল গিয়ে নিছনি নগর॥ মধুর মাদল বাজে কাড়া পড়া মানি। কাসর সুন্দর বাজে হরি হরি ধ্বনি॥ দণ্ডী মুহুরি বাজে রসাল মৃদঙ্গ। বাঝরি ডিণ্ডিম বাজে পিনাক তুরঙ্গ॥ কন্তাতী বর্যাতী পথে হৈল হুড়াহুড়ি। কন্দল করিয়া পথে নিভাইল দেউটী॥ (৩) অমলা (৪) ফেলাইয়া দিল এ গুড় চাউলি (৫)। জামাতা দেখিয়া সায় বাণ্য উত্তরোলি। (৬) যতেক বণিকের নারী বএস (৭) কিশোরী। দেখিয়া সন্তোষ বড় অমলা সুন্দরী॥ (১) সম্ভবতঃ ইনি গঙ্গাদাসের রচনার মধ্যে নিজের নামটি যোজনা করিয়া গৌরবান্বিত হইতে চাহিয়াছেন। বিদ্যাপতির পদ লইয়া গোবিন্দদাস যে ভাবে নিজের নামের ভণিতা দিয়াছেন, তাহাতে গোবিন্দদাসের কৌশল ও কবিত্বের পরিচয় আছে। কিন্তু অনেক সময় পুথি নকলকারগণ ও কবির ভণিতার সঙ্গে এই ভাবে নিজের নাম যুড়িয়া দিয়া কৃতার্থ হইয়াছেন। এখানে তাহাই হইয়াছে বলিয়া মনে হয়। (২) বরষাত্রিগণ। (৩) দেউটী = দীপ। বরপক্ষ ও কন্যাপক্ষীয় লোকগণের কৃত্রিম কলহ ও দীপ-নির্ব্বাণ-প্রথা এখনও অনেক সমাজে প্রচলিত আছে। (৪) বেহুলার মাতা। কোন কোন মনসামঙ্গল কাব্যে ইহার নাম ‘স্বমিত্রা ও কোন কোন কাব্যে ইনি ‘কমলা’ নামে অভিহিত। (৫) লাজ ও পুষ্প-বর্ষণের ন্তায় বোধ করি গুড় ও চাউল বর্ষণের রীতি ছিল। (৬) জামাতা দেখিয়া সায় বেণে (বেহুলার পিতা) উপস্থিত হইলেন। (৭) বয়স। ૨ (tગ লক্ষ্মীন্ধরের বিবাহ।