বিষয়বস্তুতে চলুন

বত্রিশ সিংহাসন/২৩

উইকিসংকলন থেকে

করুণাবতী এয়ােবিংশ পুত্তলিকা

ক্রোধাভাসে বলিল, হে ভােজরাজ, তুমি নিত্য নিত্য সিংহাসনারােহণার্থ আসিয়া ফিরিয়া যাও, ইহাতে তােমার মনে কিছুমাত্র লজ্জা হয় না, অন্য কেহ হইলে লজ্জায় মুখাবলােকন করাইত না। বীর বিক্রম- দিত্য যে সিংহাসনে উপবেশন করিতেন তুমি কি বিবে- চনায় সেই সিংহাসনে বসিতে বাসনা কর। কাক কখন হংসের তুল্য হইতে পারে না। সিংহের যেমন সম্মান শৃগালের তজপ নহে। মূখের কখন পণ্ডিতের তুল্য সন্মান হইতে পারেনা। তুমি নির্বোধ, তােমার কিছু মাত্র জ্ঞান নাই। শফরী যেমন অল্প জলে লম্ফ ঝম্প করে, তুমি সেই প্রকার অল্প প্রভুত্ব পাপ্ত হইয়া অহ- স্কারে অন্ধ হইয়াছ। অতএব তুমি এই সিংহাসনী- রােহণ করিওনা, করিলে ভস্মরাশি হইবে।

 পুত্তলিকা সহসা এই সকল কটুকথাকথনানন্তর, বােদন করিতে লাগিল। তাহা দেখিয়া রাজা জিজ্ঞাসা করিলেন হে সুন্দরি তুমি কেন রােদন করিতেছ, তােমার অন্তঃকরণে কি দুঃখােদয় হইয়াছে। তুমি রাজা বিক্রমাদিত্যের গুণ ও পুরুষত্বের কোন প্রসঙ্গ বল, আমি শুনিব। করুণাবতী কহিল যদি তুমি নিবিষ্টমনা হইয়া আমার কথা শ্রবণ কর তবে আমি তাহা কহি। রাজা এই কথায় সিংহাসনের নিম্নভাগে আসন পরিগ্রহ পূর্ব্বক বসিলেন, এবং তাঁহার সভাস্থ সমস্ত লোক তাহার চতুর্দিকে উপবিষ্ট হইল। পুত্তলিকা কহিতে লাগিল হে ভূপাল তবে তুমি, রাজা বিক্রমাদিত্যের গুণমাহাত্ম্য শ্রবণ কর।

 রাজা বিক্রমাদিত্য যেমন সাহসী, যশস্বী ও পুণ্যাত্মা। ছিলেন কলিযুগে তণ্ডুল্য আর কেহ অদ্যাপি জন্ম গ্রহণ করে নাই, পরে জন্মিবে এমতও অনুভব হয় না। যখন রাজা বিক্রমাদিত্য স্বীয় সহোদর শঙ্কুকে সংহার করিয়া তাহার সিংহাসন রোহণ করিলেন, তখন তাহার প্রধান মন্ত্রীকে কহিলেন অহে মন্ত্রি, পুরাতন লোকদিগের দ্বারা আমার রাজকর্ম্ম নির্বাহ হইবেক না। অতএব তুমি আমাকে রাজকর্ম্মক্ষম বিচক্ষণ বিংশতি জন মনুষ্য আনিয়া দাও, আমি তাহাদের দ্বারা রাজকর্ম্ম করাইব। মন্ত্রী রাজাজ্ঞানুসারে বিংশতি জন রূপবান, সৎকুলোদ্ভব, বিচক্ষণ মনুষ্য আনিয়া দিলেন। রাজা তাহাদিগকে দেখিয়া অতিশয় সন্তুষ্ট হইলেন, এবং সকলকে শিরোপা ও তাম্বুল দান পূর্বক সম্মান করিয়া, উপস্থিত থাকিতে আজ্ঞা দিলেন। কয়েক দিবস পরে, তাহাদিগের কাহাকে মন্ত্রী, কাহাকে নগরপাল, কাহাকে সেনাপতি, এই প্রকার এক এক জনকে এক এক কর্মে নিযুক্ত করিয়া, পুরাতন কর্ম্মকারক গণকে বিদায় দিলেন, এবং রাজকর্মের নুতন নিয়মাদি করিলেন। পুরাতন কর্ম্মকারীর মধ্যে কেবল ঐ প্রধান মন্ত্রীই থাকিলেন।

 নুতন লোক নিযুক্ত হইলে পর, কর্ম্মভ্রষ্ট কর্ম্মকারীগণ ঐ মন্ত্রীর সদনে যাইয়া, রাজার রাজ্যশাসনপ্রণালীর বিস্তর প্রশংসা করিতে লাগিল। মন্ত্রী তাহাদের অভিপ্রায় বুবিয়া তাহাদিগকে বলিলেন তোমরা আমার নিকট গমনাগমন করিওনা। আমা দ্বারা তোমাদের মনস্কামনা সিদ্ধ হইবেনা, প্রত্যুত, রাজা শুনিলে মনে করিবেন ইহারা কোন মন্ত্রণা করিতেছে, এবং তাহাতে। কুপিত হইবেন, আমি দুনামের বড় শঙ্কা করি। আমি যাহা কহিলাম ইহাতে তোমরা বিরুদ্ধ বিবেচনা করিওনা। এই কথা শুনিয়া কর্ম্মভ্রষ্ট কর্মচারীগণ তাহার সদনে গমনাগমনে ক্ষান্ত হইল।

অন ন্তর মন্ত্রী মনে মনে এই চিন্তা করিলেন রাজার চিত্ততোক কোন কর্ম্ম করা উচিত। পরে এক দিবস তিনি নদীতে স্নান করিয়া জলে দণ্ডায়মান হইয়া জপ করিতেছেন, এমত সময়ে দেখিলেন একটী অতি অপূর্ব পুষ্প ভাসিয়া যাইতেছে, ততুল্য ফুল কখন কাহার দৃষ্টিগোচর হয় নাই। তাহা দেখিয়া মনে মনে ভাবিলেন রাজাকে এই কুসুমটী উপঢৌকন দিলে তিনি অবশ্যই সন্তুষ্ট হইবেন। ইহা ভাবিয়া ফুলটী তুলিয়া লইলেন এবং হৃষ্টান্তঃকরণে গৃহে আসিয়া পরিধেয় বস্ত্রাদি পরিবর্তন পূর্ব্বক রাজার নিকটে গিয়া রাজাকে সেই পুষ্প অর্পণ করিলেন। রাজা পুষ্প পাইয়া অতিশয় আল্লাদিত হইলেন। কিন্তু কহিলেন, যে বৃক্ষে এই পুষ্প জন্মিয়াছে তাহা তোমাকে আনিতে হইবে, তাহা হইলে আমি তোমার প্রতি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইব, নতুবা তোমাকে নগর হইতে নির্বাসন করিয়া দিব।

 রাজার এই আজ্ঞায় মন্ত্রী ক্ষুন্ন হইয়া গৃহে প্রত্যা গমন পূবর্বক আক্ষেপ করিতে লাগিলেন আমি পূর্ব্ব জন্মে কি অপরাধ করিয়াছিলাম, তাহার এই প্রতিফল হইল। আমি এমত সুন্দর বস্তু বাজাকে দিলাম, তিনি তাহাতে আহলাদিত হইয়াও আমার প্রতি ক্রোধ করিলেন। হায়, কোন কর্ম্মের কি ফল, কিছুই বুঝ। যায় না। হিত করিলে বিপরীত ঘটে, কালের গতি অতি বিচিত্র। এই প্রকার অনেক বিলাপ ও পরিতাপের পর মনে মনে ভাবিলেন রাজা আমাকে বৃক্ষ আনিতে আজ্ঞা করিয়াছেন, যদি বৃক্ষ আনিয়া দিতে পারি তবে নগর হইতে বহিষ্কত হইব। কিন্তু কোথায় বৃক্ষ পাইব, কোথায় বৃক্ষের উদ্দেশ করিব। যদি ক্লেশ স্বীকার করিয়া অন্বেষণ করিতে যাই, ক্ষতি নাই, কিন্তু প্রাপ্ত না হইলে দ্বিগুণ মনে দুঃখ। যাহা হউক, আমার আসন্ন কাল উপস্থিত দেখিতেছি, কিন্তু অপমান গ্রস্ত হইয়া মরা অনুচিত। যদি মরিতেই হইল অগ্রে বনে যাইয়া বৃক্ষ অন্বেষণ করি, যদি বৃক্ষ না পাই, আপনিই প্রাণ ত্যাগ করিব।

 মন্ত্রী মনে মনে ইহা স্থির করিয়া এক জন সুত্রধরকে আহ্বান পূর্ব্বক বলিলেন আমাকে এমন এক খান জলযান নির্মাণ করিয়া দাও যে, তাহা কাণ্ডারী ব্যতিরেকে চলিবে, এবং যে দিকে গমন করিতে ইচ্ছা করিব সেই দিকেই যাইবে। সুত্রধর যেআজ্ঞা বলিয়া, কিছু অগ্রিম মুদ্রা গ্রহণ পূর্ব্বক বিদায় লইল। পরে ঐরূপ আশ্চর্য্য তরণী প্রস্তুত করিয়া মন্ত্রীকে সংবাদ দিলে, মন্ত্রী নদীতীরে যাইয়া তরণী দৃষ্টে অতিশয় তুষ্ট হইলেন, এবং সুত্রধরকে তৎক্ষণাৎ পচখান গ্রাম পুরস্কার। দিলেন। তদনন্তর জলযানে আপন গ্রাসাচ্ছাদনীয় দ্রব্যাদি উত্তোলন করাইয়া, আত্মীয় গণের স্থানে বিদায় গ্রহণ পূর্বক তাহাদিগকে কহিলেন যদি আমি জীবদ্দ শায় প্রত্যাগমন করি তবে তোমাদের সহিত পুনর্ব্বার সাক্ষাৎ করিব, নতুবা এই বিদায় হইলাম। তাহার পরিবারগণ এই কথা শুনিয়া অতিশয় দুঃখিত হইল, মন্ত্রী ও অতিশয় দুঃখিত মনে নৌকারোহণ করিলেন। পরে বাদাম তুলিয়া তরণী ছাড়িয়া দিলেন, এবং যে দিক হইতে পুষ্প ভাসিয়া আসিয়াছিল সেই দিকেই গমন। করিতে লাগিলেন। গমন কালে নদীর দুই পাশ্বের বৃক্ষ। সকল বিশেষরূপে নিরীক্ষণ করিয়া দেখিতে লাগিলেন।

 মন্ত্রী এই প্রকারে কয়েক দিবস গমন করিয়া, পরিশেষে এক মহা অরণ্যানীমধ্যে পড়িলেন। তখন পথসম্বল সকল শেষ হইয়াছিল, তাহাতে মনে মনে ভাবিলেন এইক্ষণে জলযানে থাকা আর উচিত নহে, যে জন্য আসিয়াছি তাহার অন্বেষণ করি। মন্ত্রী এই চিন্তা করিতেছেন, নৌকাও বায়ুবেগে গমন করিতেছে, ইতি মধ্যে এক অপূর্ব পর্বত দৃষ্ট হইল। ঐ পর্বতের মধ্য দিয়া নিঝরজল নির্গত হইতেছিল। মন্ত্রী তাহা দেখিয়া সেই স্থানে তরী রাখিয়া তট দ্বারা গিরি আরোহণ করিলেন। পরে, এক নদীতীরদিয়া গমন করিতে করিতে দেখিলেন হস্তী ব্যাঘ্র গণ্ডার প্রভৃতি নানা জাতীয় বন্য জন্তু যথা তথা ভ্রমণ করিতেছে, তাহাদের ভয়ানক চীৎকারে মেদিনী কম্পমানা হইতেছে। মন্ত্রী ইহাতেও ভীত না হইয়া নিয়ে গমন করিতে লাগিলেন। কতক দূর গিয়া দেখিলেন নদীপ্রবাহ দিয়া সেই প্রকার আর একটী পুষ্প ভাসিয়া আসিতেছে। তাহাতে মনে মনে মহানন্দিত হইয়া কহিলেন, সেই প্রকার আর একটী পুষ্প দেখিতে পাইলাম, পরমেশ্বরের কৃপা হইলে, বৃক্ষও দৃষ্ট হইবে। ইহা ভাবিতে ভাবিতে যত অর্থে চলিলেন ততই সেই প্রকার আরো পুষ্প দেখিতে পাইলেন। ইহাতে হৃদ্বোধ হইল অবশ্যই বৃক্ষ পাইব। অনন্তর আরো কিয়দরে যাইয়া দেখিলেন সম্মুখে এক গিরিশিখর এবং তন্নিমে এক অট্টালিকা আছে। তাহার সৌন্দর্য্য সন্দশনে আশ্চর্যান্বিত হইয়া মনে মনে ভাবিলেন অগম্য অবণ্যের মধ্যে এমত রম্য স্থান দেখিতেছি, ইহার মধ্যে অবশ্যই কোন মনুষ্য থাকিবেন। ইহা চিন্তা করিতে করিতে অট্টালিকার অনতিদূরে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন এক কঠোর তপস্বী নদীতীরস্থ এক বিটপীস্কন্ধে পাদ বন্ধন পূর্ব্বক অধঃশির হইয়া জলের উপরিভাগে লম্বমান আছেন, তাহার অস্থি চর্ম শুষ্ক হইয়া কাবৎ হইয়াছে, তাহারই শাণিত এক এক ফোটা নদীতে পতিত হইয়া, পুষ্প হইয়া ভাসিয়া যাইতেছে। এই অদ্ভুত ব্যাপার দেখিয়া মন্ত্রী মনে মনে কহিলেন ভগবানের লীলা বুদ্ধির অগম্য। তিনি তৎপরে দেখিলেন আরো বিংশতি জন জটাধারী যোগী যোগাসনে ধ্যানে বসিয়া আছেন, কাহারও বাহ জ্ঞান নাই, সকলে অস্থি চর্ম্ম সার ইয়াছেন, এবং তাহাদের চতুর্দিকে দণ্ড কমণ্ডলু পড়িয়া আছে।

 এতাবদবলোকনানন্তর, মন্ত্রী আপন জলযানের নিকট প্রত্যাগমন করিলেন, এবং পথসম্বল ফল মূল আহরণ পূর্ব্বক তরী আরোহণ করিয়া কয়েক দিবসে আপন আলয়ে ফিরিয়া আসিলেন। তাহার গৃহজনেরা তাঁহার প্রত্যাগমনে মহা আহলাদিত হইয়া তাঁহার সাহস ও কৃতকার্য্যতার ধন্যবাদ করিল। অধিকন্তু তাঁহার বাটীতে বাদ্যবাদন এবং নানাপ্রকার মাঙ্গলিক কর্ম্ম হইতে লাগিল।

 অনন্তর মহীপাল মন্ত্রীর প্রত্যাগমন সম্বাদ শুনিয়া। তাহাকে আনয়নার্থে অপর এক মন্ত্রীকে প্রেরণ করিলেন। ঐ মন্ত্রী তাহাকে রাজসাক্ষাৎকারে উপস্থিত করিলে, মন্ত্রী রাজার পদানত হইলেন। রাজা তাহাকে উত্তোলন করিয়া কুশলাদি জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন। তাহাতে মন্ত্রী গললগ্নবাস হইয়া বলিলেন মহারাজ আমি এক অদ্ভুত ব্যাপার দেখিয়া আসিয়াছি, কিন্তু তাহা কহিলে আপনার প্রত্যয় হইবে না। জিজ্ঞাসা করিলেন, কি অদ্ভুত ব্যাপার। মন্ত্রী বলিলেন মহারাজ আমি এখান হইতে বিদায় হইয়া এক অরণ্যে উপনীত হইলাম, তথা হইতে এক গিরি উল্লম্মান পূর্বক তন্নিষ ভাগে এক অপূর্ব্ব অট্টালিকা দেখিলাম, তন্নিকটে এক যোগী এক বিটপীশাখায় শৃঙ্খলে পাদ বন্ধন পূর্ব্বক নদীর উপর অধঃশিরা হইয়া ঝলিতেছেন। ঐ যোগীর চর্ম অস্থিতে লিপ্ত হইয়াছে, কিন্তু তাহার শরীর হইতে ফোটা ফোটা শোণিত জলে পড়িয়া পুষ্প হইয়া আসিয়া আসিতেছে। ঐ মহীরুহমূলে আরো বিংশতি জন তপস্বী যোগাসনে বসিয়া ধ্যান করিতেছেন, তাহাদের পন্দ বা বাহ্যজ্ঞান কিছুই নাই।

 রাজা কিঞ্চিৎ হাস্য করিয়া বলিলেন শুন, আমি তোমাকে এই অদ্ভুত ব্যাপারের তাবৎ বিবরণ কহিতেছি। যে তপস্বীর দেহ বৃক্ষে লম্বমান দেখিয়াছ, তাহা আমার জন্মান্তরীয় দেহ, এবং যে বিংশতি জন যোগী যোগাসনে আছেন দেখিয়াছি, তাহারা আমার দাস। আমি পূর্ব্ব জন্মে অতি কঠোর তপস্যা করিয়াছিলাম, সেই পুণ্যে শঙ্কুকে সংহার করিয়া রাজত্ব পাইয়াছি। এই রাজত্ব প্রাপ্তি পূর্ব্ব জন্মের পুণ্য বলে হইয়াছে, এজন্য আমার ভ্রাতৃবধের অপরাধী হইতে হয় নাই। ঐ সকল দাস পূর্ব্ব জন্মে আমার অনেক সেবা করিয়াছিল এবং আমার সঙ্গে প্রাণ দিয়াছিল, এজন্য আমি তাহাদিগকে রাজ্যের প্রধান প্রধান কর্মে নিযুক্ত করিয়াছি। এই নিগূঢ় ব্যাপার এপর্য্যন্ত কেহ অবগত হইতে পারে নাই এই জন্য, সকলে বলিয়া থাকে, বিক্রমাদিত্য আপন জ্যেষ্টকে সংহার করিয়া রাজ্য লইয়াছেন। কিন্তু ইহাতে আমার অপরাধ নাই, কর্মের যে অবশ্যম্ভাবী ফল তাহাই হইয়াছে। এই বিষয়ের প্রত্যক্ষার্থ, আমি তােমাকে পুষ্প আনয়ন স্থলে প্রেরণ করিয়াছিলাম। এইক্ষণে তােমার প্রতীত হইল। অতএব এ সকল কথা ব্যক্ত করিওনা। কেননা তাহা শুনিলে অন্য লােকে রাজ্য লাভের লােভে যােগারম্ভ করিবে। ইহা বলিয়া রাজা তাহাকে চির কালের নিমিত্ত সকল মন্ত্রীর প্রধান করিয়া রাখিলেন।

 করুণাবতী এই বিবরণ সমাপন করিয়া বলিল শুন ভােজরাজ, রাজা বিক্রমাদিত্যের তুল্য যে ব্যক্তি পুণ্যাত্মা, গুণগ্রাহী ও সর্ব্বগুণান্বিত, তিনিই এই সিংহাস- নােপবেশনের ইচ্ছা করিতে পারেন। হে ভোজরাজ তুমি ততুল্য নহ, অতএব তাহার আসনে কি প্রকারে অধ্যাসীন হইবে।

 এই কথা শুনিতে শুনিতে সে দিবসের শুভক্ষণ অতীত হইল, সিংহাসনােপবেশন করা হইল না। পর দিবস রাজা পুনর্ব্বার তদভিলাষে সিংহাসনসান্নিধ্যে উপস্থিত হইলে,