পাতা:অমৃত-দ্বীপ - হেমেন্দ্রকুমার রায় (১৯৪০).pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অমৃত-দ্বীপ
১৭

সুন্দরবাবু! কারণ তিনি হচ্ছেন যুদ্ধের দেবী, আর বোম্বেটেরাও এই বন্দরে আসছে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতেই।”

 সুন্দরবাবু দুই হাত জোড় ক’রে মা-কালীর উদ্দেশে চক্ষু মুদে তিন বার প্রণাম ক’রে বল্‌লেন, “মাণিক, এ-সময়ে আর ভয় দেখিও না, মা-জগদম্বাকে একবার প্রাণ ভ’রে ডাকতে দাও।”

 কুমার ফিরে দেখলে,শত্রুরা দ্বীপ লক্ষ্য ক’রে প্রাণপণে জাহাজ চালিয়েছে এবং দূরে তার দিকে বেগে তাড়া ক’রে আসছে সাগর-তরঙ্গ তোলপাড় ক’রে মূর্ত্তিমান মহাকালের মত সুভীষণ ঘূর্ণাবর্ত্ত!

 দ্বীপের ভিতরে ঢুকে সমুদ্রের জল আবার মোড় ফিরে গেছে, কাজেই জাহাজও সঙ্গে সঙ্গে মোড় ফিরলে। তখন দ্বীপের বন-জঙ্গল ঠিক যবনিকার মতই বাহির-সমুদ্র, ঘূর্ণাবর্ত্ত ও বোম্বেটে-জাহাজের সমস্ত দৃশ্য একেবারে ঢেকে দিলে।

 এমন সময়ে বিমল দৌড়ে সকলের কাছে এসে বললে, “জয়ন্তবাবু, কাপ্তেন বল্‌লেন এখানকার জল গভীর নয়, জাহাজ আর চলবে না। নাবিকরা নৌকোগুলো নামাচ্ছে, আমাদেরও জাহাজ থেকে নামতে হবে।”

 সুন্দরবাবু বল্‌লেন, “কেন?”

 ——“বোম্বেটেরাও এখানে আসছে, তারা আমাদের চেয়ে দলে ঢের ভারি। আমরা ডাঙায় না নামলে তাদের আক্রমণ ঠেকাতে পারব না।”

 সুন্দরবাবু আবার মুষড়ে প’ড়ে বল্‌লেন, “তাহ’লে যুদ্ধ আমাদের করতেই হবে?”

 —“নিশ্চয়! টাইফুন আর বোম্বটে—আমাদের এখন যুদ্ধ করতে