পাতা:আখ্যানমঞ্জরী (তৃতীয় ভাগ) - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর.pdf/১১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পুরুষজাতির নৃশংসতা।
১০৫

আসিত। এই সময়ে দাসদাসীর সাতিশয় প্রয়োজন উপস্থিত হইয়াছিল, এজন্য ঐ জাহাজ নঙ্গর করিবামাত্র, ক্রেতৃগণ নৌকায় চড়িয়া জাহাজে উপস্থিত হইতে লাগিল। সে বার, ঐ জাহাজে বিক্রয়োপযোগী দাসদাসী ছিল না, সুতরাং তাহারা নিতান্ত হতাশ হইল। কিয়ৎক্ষণ পরে ইয়ারিকোকে দেখিতে পাইয়া, এক ব্যক্তি তাহাকে ইঙ্কলের সম্পত্তি বলিয়া বুঝিতে পারিয়া, তাহার নিকটে ক্রয় প্রস্তাব কবিল। ইঙ্কল্ অসম্মতি প্রদর্শন করিলে, প্রথম প্রস্তাবিত ন্যূন মূল্যই অসম্মতির কারণ, এই বিবেচনা করিয়া সে একবারে অত্যন্ত অধিক মূল্যদানের প্রস্তাব করিল। ইঙ্কল্, কোনও ক্রমে বিক্রয় করিতে সম্মত হইল না। পরে সে বাসস্থান স্থির করিয়া, ইয়ারিকোকে লইয়া তথায় গমন করিল।

 ইঙ্কলের অর্থলালসা অত্যন্ত প্রবল, অধিক অর্থলাভের অভিলাষেই, সে আমেরিকায় গমন করে। কিন্তু, দৈবঘটনায় এ পর্যন্ত উপার্জ্জন দূরে থাকুক, প্রাণান্ত ঘটিবার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা হইয়াছিল। যত দিন অরণ্যে ইয়ারিকোর আশ্রয়ে ছিল, বাঁচিয়া স্বদেশীয় সমাজে আসিতে পারে কি না, তাহারই নিশ্চয় ছিল না, সুতরাং তৎকালে লাভালাভের ভাবনা একবারও তাহার হৃদয়ে উদিত হয় নাই। এক্ষণে, ঐ সকল শঙ্কা একবারে নিবারিত হওয়াতে, সে অনুক্ষণ এই ভাবিতে লাগিল, যদি আমি বিপদগ্রস্ত না হইয়া, যথাকালে এই স্থানে আসিতে পারিতাম, তাহা হইলে এতদিন আমার কত লাভ হইত। এখন কি