এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
বীণা পুস্তকরঞ্জিত হস্তে।
পুনঃ শষ্য জন্মিল হর্ষিত প্রজাগণ। পূর্ব্বমত রাজ্য পুনঃ কৈল সংবরণ।। তপতী সহিত ক্রীড়া করে চিরকাল। তপতীর গর্ভে হৈল কুরু মহীপাল।। কুরুর যতেক কর্ম্ম না যায় গনন। কুরুবংশ নাম খ্যাত হৈল সে কারণ।। পুরোহিত বশিষ্ঠের সাহায্য কারণ। পাইলেন ধর্ম্ম অর্থ কাম সংবরণ।। তপতীর গর্ভজাত কুরু নরবর। তোমরা যাহার বংশ পঞ্চ সহোদর।। তাপত্য বলিয়া তেঁই কহি যে তোমারে। পূর্ব্ববংশ-কথা এই খ্যাত চরাচরে।। শুনিয়া হরিষ হৈল পার্থ ধনুর্দ্ধর। পুনঃ জিজ্ঞাসিল কহ গন্ধর্ব্ব ঈশ্বর।। সংবরণ নৃপে রক্ষা করিলেন যিনি। কে তিনি বশিষ্ঠ কহ তাঁর কথা শুনি।। গন্ধর্ব্ব বলিল সে বিখ্যাত তপোধন। বশিষ্ঠের গুণ কর্ম্ম না যায় কথন।। কাম ক্রোধ জিনি হেন নাহি ত্রিভূবনে। হেন কাম ক্রোধ সেবে মুনির চরণে।। বিশ্বামিত্র বহু তাঁর ক্রোধ করাইল। তথাপিও মুনি তাঁরে কিছু না বলিল।। ইক্ষাকু-বংশের রাজা যাঁর বুদ্ধিবলে। নিষ্কণ্টকে বৈভবে ভুঞ্জিল ভূমণ্ডলে।। ------ বিশ্বামিত্রের বশিষ্ঠ বিরোধ ও কল্মাষপাদ রাজার উপাখ্যান। জিজ্ঞাসেন ধনঞ্জয় অদ্ভুত কথন। বিশ্বামিত্র বশিষ্ঠে কলহ কি কারণ।। গন্ধর্ব্ব কহিল শুন কথা পুরাতন। কান্যকুব্জ দেশে গাধি নামেতে রাজন।। একদিন সসৈন্যে গাধির নন্দন। মহাবনে প্রবেশিল মৃগয়া কারণ।। মারিল অনেক মৃগ বনের ভিতর। মৃগয়ায় শ্রান্ত বড় হৈল নরবর।। ক্ষুধায় পীড়িত বড় হৈল পরিশ্রম। ভ্রমিতে ভ্রমিতে গেল বশিষ্ঠ-আশ্রম।। মনোহর স্থল দেখি হৈল হৃষ্টমন। উত্তরিল যথায় বশিষ্ঠ তপোধন।। রাজারে দেখিয়া পাদ্য অর্ঘ দিয়া মুনি। অতিথি বিধানে পূজা করিলেন তিনি।। রাজার যতেক সৈন্য পরিশ্রান্ত শুনি। নন্দিনী ধেনুর প্রতি বলিলেন মুনি।। দেখহ রাজার সৈন্য অতিথি আমার। কামানুসারে তোষ করহ সবার।। বশিষ্ঠের আজ্ঞা পেয়ে সুরভী-নন্দিনী। সংসারে যাহার কর্ম্ম অদ্ভুত কাহিনী।। নিমেষে বিবিধ দ্রব্য করিল সৃজন। চর্ব্ব্য চুষ্য লেহ্য পেয় নানা রত্ন ধন।। বস্ত্র অলঙ্কার মাল্য কুসুম চন্দন। বিচিত্র পালঙ্ক আর বসিতে আসন।। যেই যাহা চাহে তাহা পায় ততক্ষণে। পাইল পরমানন্দ সর্ব্ব সৈন্যগণে।। গাভীর দেখিয়া কর্ম্ম বিস্মিত রাজন। বশিষ্ঠ মুনিরে বলে গাধির নন্দন।। এই গাভী মুনিবর দান কর মোরে। এক কোটী গাভী দিভ স্বর্ণ মণ্ডি খুরে।। নতুবা সকল রাজ্য লহ তপোধন। হস্তী অশ্ব পদাতিক যত সৈন্যগণ।। বশিষ্ঠ বলেন নাহি দিতে পারি দান। দেবতা অতথি হেতু আছে মম স্থান।। রাজা বলে হও তুমি জাতিতে ব্রাম্ভণ। ব্রাম্ভণের হেন দ্রব্য নাহি প্রয়োজন।। হেন দ্রব্য মুনিবর ভূপতিকে সাজে। কি করিবে তুমি ইহা থাক বনমাঝে।। গাভী নাহি দিবে যদি আপন ইচ্ছায়। নিশ্চয় লইব গাভী জানাই তোমায়।। মাগিলে না দিবে গাভী ল'য়ে যাব বলে। ক্ষত্রধর্ম্মী আমরে লইব বলে ছলে।। বশিষ্ঠ বলেন তুমি অধিকারী দেশে। বলিষ্ঠ ক্ষত্রিয়-সৈন্য সহায় বিশেষে।।