এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
জগদ্ধিতায় কৃষ্ণায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।।
আজ্ঞা পেয়ে গেল দ্বিজ পরম আহ্লাদে। সর্ব্বশাস্ত্র জ্ঞাত হৈল গুরুর আশীর্ব্বাদে।। ধান্য-ক্ষেত্রে জল যায় বাহির হইয়া। যত্ন করি আলি বান্ধি জল রাখ গিয়া। জল সব যায় গুরু পাছে ক্রোধ করে। আপনি শুইল দ্বিজ বান্ধের উপরা।। সমস্ত দিবস গেল হইল রজনী। না আইল শিষ্য, দ্বিজ চলিল আপনি।। ক্ষেত্রমধ্যে গিয়া ডাক দিল দ্বিজবর। শিষ্য বলে শুয়ে আছি আলির উপর।। বহু যত্ন করিলাম না রয় বন্ধন। আপনি শুইনু বান্ধে তাহার কারণ।। শুনিয়া বলিল গুরু আইস উঠিয়া। শীগ্র আসি গুরুপদে প্রণমিল গিয়া।। আশীষ করিয়া গুরু করিল কল্যাণ। চারি বেদে ষট-শাস্ত্রে হোক তব জ্ঞান।। এত বলি বিদায় ক্রিল দ্বিজবর। প্রণাম করিয়া শিষ্য গেল নিজ ঘর।। পুণ্যকথা ভারতের শুনে পুণ্যবান। কাশীরাম দাস কহে ভব-পরিত্রাণ।। ------ উতঙ্কের উপাখ্যান। উতঙ্ক তৃতীয় শিষ্য পড়ে গুরুস্থানে। কতদিনে যায় গুরু যজ্ঞ-নিমন্ত্রণে।। উতঙ্কে বলিল গুরু থাক তুমি ঘরে। কিছু নষ্ট নাহি হয় থাকিবে গোচরে।। এত বলি গেল দ্বিজ যথা যজ্ঞস্থান। কতদিনে গুরুপত্নী কৈল ঋতুস্নান।। উতঙ্কে ডাকিয়া তবে ব্রাম্ভণী কহিল। তোমারে সমর্পি গৃহ তব গুরু গেল।। কোন' দ্রব্য নষ্ট যেন নহে কদাচন। ঋতু নষ্ট হয় তুমি করহ রক্ষণ।। শুনিয়া বিস্ময়চিত্ত হইল উতঙ্ক। উদবিগ্ন বসিয়া ভাবে হৃদিয়ে আতঙ্ক।। কি করিব কি হইবে ইহার উপায়। গৃহরক্ষা হেতু গুরু রাখিল আমায়।। ঋতুরক্ষাকর্ম্ম এই না হয় আমার। পরদার মহাপাপ তাহে গুরুদার।। এত চিন্তে ব্রাম্ভণীরে না দেয় উত্তর। ব্রাম্ভণ আইল কত দিবস অন্তর।। উতঙ্কের তাপ ব্রাম্ভণীর মনে জাগে। একান্তে ব্রাম্ভণী কহে ব্রাম্ভণের আগে।। দিবে গুরুদক্ষিণা উতঙ্ক যেইক্ষণে। পাঠাইবে তাহাকে আমার সন্নিধানে।। তবে দ্বিজ জানিল সকল বিবরণ। তুষ্ট হয়ে উতঙ্কে বলিল ততক্ষণ।। যাহ দ্বিজ সর্ব্বশাস্ত্রে হও তুমি জ্ঞাত। শুনিয়া উতঙ্ক কহে করি যোড়কর।। আজ্ঞা কর গোঁসাই দক্ষিণা কিছু দিব। গুরু বলে আমি ত তোমারে না মাগিব।। যাহা দিবা, দেহ গুরুপত্নী যাহা মাগে। এত শুনি গেল দ্বিজ গুরুপত্নী আগে।। দক্ষিণা যাচয়ে দ্বিজ করি যোড়পাণি। হৃদিয়ে চিন্তিয়া তবে বলিল ব্রাম্ভণী।। পৌষ্য নৃপতির স্ত্রীর শ্রবণ কুণ্ডল। আনি দিলে পাই তব দক্ষিণা সকল।। সপ্তদিন গিতরেয়ানিয়া দিবে মোরে। না আনিলে দিব শাপ কহিলাম তোরে।। এত শুনি উতঙ্ক গুরুরে নিবেদিল। যাও হে নির্বিগ্নে দ্বিজ গুরু আজ্ঞা দিল।। গুরুকে প্রণাম করি উতঙ্ক চলিল। কতদূর পথে এক বৃষভ চলিল।। পুরীষ ত্যাজিয়া বৃষ আছে দাঁড়াইয়া। উতঙ্কে দেখিয়া বৃষ বলিল ডাকিয়া।। হের দেখ মল মোর উতঙ্ক ব্রাম্ভণ। হইবে তোমার প্রিয় করহ ভক্ষণ।। উতঙ্ক বলিল হেন নহে কদাচন। অসম্মান পথে প্রিয় না দেখি প্রয়োজন।। বৃষ বলে অসম্মান নহে দ্বিজবর। তোমার গুরুর দিব্য খাও এ গোবর।। গুরুদিব্য শুনি দ্বিজ ভাবিল বিস্তর। গোবর ভক্ষণ করি চলিল সত্বর।।