বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৮০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অশ্বমেধপর্ব। ] বুধের ধ্যান—মাগধং দ্বাঙ্গুলাত্ৰেয়ং বৈশ্বাং পতং চতুভূজং । ৭৯৭ পাদ্য অর্ঘ্যে যুধিষ্ঠির করিয়া পূজন । প্রণাম করিয়া সবে দিলেন আসন ॥ বসিলেন যুধিষ্ঠির কৃষ্ণকে স্মরিয়া । ভীমাৰ্জ্জুন সহদেব নকুল লইয়া ॥ অনুচরে আয়োজন সব যোগাইল । যজ্ঞের মণ্ডপে সব যতনে ধুইল । বেদের বিধানে মঞ্চ করিল নিৰ্ম্মাণ । আশী হাত গর্ত সেই স্বন্দর গঠন ॥ শাস্ত্রমত কুণ্ড শত হাত পরিসর । নিৰ্ম্মাইল যজ্ঞবেদী পরম সুন্দর ॥ সুবর্ণ রচিত ঘট অরোপিল তাতে । পুষ্পবারা বান্ধিল চান্দোয় চারিভিতে ॥ দ্রৌপদীর সহিত ধৰ্ম্মরাজ করি স্নান । করিলেন দোহে শুক্লবস্ত্র পরিধান ॥ বেদধ্বনি করিলেন সৰ্ব্ব মুনিগণ । ধৌম্য পুরোহিত করে বেদ উচ্চারণ ॥ সঙ্কল্প করেন শুভক্ষণে নরপতি । তবে ব্যাসদেব নৃপে দেন অনুমতি ॥ ব্রাহ্মণ বরণ কর বসন ভূষণে । ত্বরায় আনহ অশ্ব যজ্ঞ সন্নিধানে ॥ ব্যাসের বচনে রাজা সানন্দ হইয়া । আনাইল তুরঙ্গকে যজ্ঞে সাজাইয়া ॥ অসন বসন সব কনকে রচিত। মৃবর্ণের থালি ঝারি মণিতে খচিত ॥ বিংশতি সহস্র বিপ্রে করিছে বরণ । প্রত্যক্ষ সবারে দেন আসন ভূষণ ॥ বরণ পাইয়া চিত্তে আনন্দিত মনে । বসিল সকল দ্বিজ যজ্ঞ আরম্ভনে ॥ দ্রৌপদী সহিত ব্ৰতী হইল রাজন। মধুপূর্ণিমাতে হৈল যজ্ঞ আরম্ভন ॥ সৰ্ব্ব স্থলক্ষণ ঘোড়া আনিয়া সত্বর । প্রক্ষালেন ছুই পদ ধৰ্ম্ম নরবর ॥ কুহম চন্দনে ঘোড়া করিল ভুষণ । বান্ধিলেন অশ্বভালে স্বর্ণ দপণ ॥ যুধিষ্ঠির নিজ নাম লিখেন দর্পণে । পৃথিবী জমিবে ঘোড়া আপনার মনে । যদি কেহ বীর থাকে পৃথিবী ভিতরে। ধরিলে যজ্ঞের ঘোড় জিনিব তাহারে ॥ নিজ বলে ছাড়াইয়া তুরগ আনিব । তবে অশ্বমেধ যজ্ঞে সঙ্কল্প করিব ॥ অশ্বভালে দপণেতে এ সব লিখিল । ঘোটক অঙ্গেতে নানা অলঙ্কার দিল । কুন্তী আর গান্ধারী প্রভূতি যত নারী । হুলাহুলি মঙ্গল করিল আগুসরি ॥ সত্যভামা আদি-যত কৃষ্ণের রমণী । মঙ্গল বিধানে অশ্ব পূজিল তখনি ॥ ধনঞ্জয়ে ডাকিয়া বলিল নরবর। অশ্ব রক্ষা হেতু ভাই সাজহ সত্বর ॥ আমি ব্ৰতী হইয়া রহিব যজ্ঞস্থানে । দিবানিশি দ্রৌপদী সহিত একাসনে ॥ অসিপত্র ব্রত আচরণে দিব মন । যতনে করিও ভাই ঘোটক রক্ষণ ॥ অশ্ব চুরি হৈলে যজ্ঞ সাঙ্গ নাহি হবে। ব্রত নন্ট হবে আর কলঙ্ক রটিবে ॥ শুনিয়াছি মুনি-মুখে এ সব কথন । অশ্বহার হয়ে দুঃখ পায় কত জন ॥ যতনে রাখিবে অশ্ব বীর ধনঞ্জয় । পৃথিবী ভ্ৰমিলে ঘোড় কাৰ্য্য সিদ্ধি হয় । নকুল থাকিবে মাত্র আমার সংহতি । সঙ্গেতে লইয়া যাও যত সেনাপতি ॥ খাণ্ডব দহিয়া তুমি তুষিলে অনলে । নিবাত কবচ বিনাশিলে বাহুবলে । চিত্ররথ গন্ধৰ্ব্বে করিলে অপমান । ভীষ্ম দ্রোণ কর্ণ সহ করিলে সংগ্রাম ॥ অর্জন বলেন রাজ চিন্ত অকারণে । আমারে জিনিতে বীর নাহি ত্রিভুবনে ॥ পৃথিবী ভ্ৰমিয়া আমি তুরঙ্গ আনিব । যদি কেহ ঘোড়া ধরে তারে বিনাশিব ॥ কৃষ্ণের প্রসাদে ভয় না করি কাহারে । কছিলাম সত্য আমি সবার গোচরে । এত বলি ধনঞ্জয় হইল বিদায় । । ঋষি মুনিগণ দিল জয়ধ্বনি তায় ॥