পাতা:কাশীদাসী মহাভারত.djvu/৮৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুম্বলপর্ব। ] প্ৰণাম মন্ত্ৰ—শখচক্ৰগদাপদ্মধারিণীম্‌ কৃষ্ণরূপিণীম্, স্থিতিরূপাং— ৮৭৯ কতবার যায় পার্থ দ্বারকা ভুবন । আনন্দসাগরে আসে নিজ নিকেতন ॥ আজি কেন অমঙ্গল দেখি অপ্রমিত । কলহ করিল কিবা কাহার সহিত ॥ কিম্বা কোন অপরাধ কৈল প্রভুস্থানে । সেই দোষে কৃষ্ণ কি করিলেন ভৎসনে ॥ বলভদ্রে সহ কিবা করিল বিবাদ । না জানি ঘটিল আজি কেমন-বিষাদ ॥ যদি পার্থ হয়ে থাকে কৃষ্ণের বর্জিত । সকলে নৈরাশ হ’ল পাণ্ডব নিশ্চিত ॥ কৃষ্ণ বিনা পাণ্ডবের কেবা আছে আর । সকল সম্পদ মম চরণ র্তাহার ॥ র্তাহার বজ্জিত হয়ে কে ধরিবে দেহ । কি করিব রাজ্যধন কি করিব গেহ ॥ এইমত যুধিষ্ঠির করেন চিন্তন । নিকটে আইল পার্থ ইন্দ্রের নন্দন ॥ চিত্র পুত্তলিকা প্রায় মুখে নাহি বোল। পড়িল ধরঐতলে হইয়া বিহবল ৷ হা কৃষ্ণ বলিয়া বীর লোটায় ধরণী । অৰ্জ্জুনের নেত্রজলে ভিজিল অবনী । রাজা জিজ্ঞাসেন কহ কুশল সংবাদ । পাণ্ডবের তরে কিবা হইলে প্রমাদ ॥ কি দোষ করিলে তুমি কৃষ্ণের চরণে । গোবিন্দ বজিত কি হইলে এত দিনে ॥ স্বরূপেতে বলহু কুশল সমাচার । কি কারণে এত দুঃখ হইল তোমার ॥ উঠ উঠ ধনঞ্জয় কহু বিবরণ । কি প্রকার আছেন সে শ্ৰীমধুসূদন ॥ কি কারণে ত্বরিত সে দারুক আইল । ভাল মন্দ সমাচার কিছু না কহিল ॥ তোমাকে লইয়া গেল দ্বারকা নগরী । , কহ তুমি কিরূপে ভেটিবে দেব হরি ॥ জগতের হর্তা কর্তা দেব নারায়ণ । এক লোমকূপে তার বৈসে কত জন ॥ কতু শিব ইন্দ্র যার এক লোমকূপে । তাহীরে সম্ভাৰ তুমি করিলে কি রূপে । মাতুল নন্দন হেন বিচারিল মনে । সেই দোষে কৃষ্ণ নাহি চাহিল নয়নে ॥ কিবা বলভদ্র সহ কৈলে অবিনয় । কি দোষ করিলে তুমি ভাই ধনঞ্জয় ॥ চারিভিতে চারি ভাই মলিন বদন ; ধূলায় লোটায় বীর ইন্দ্রের নন্দন ॥ অর্জন কহেন রাজা কি কহিব আর । এতদিনে কৃষ্ণহীন হইল সংসার ॥ পাণ্ডবের বন্ধুরূপী সেই নারায়ণ । তাহাতে বজ্জিত হ’লে শুনহ রাজন ॥ ব্ৰহ্মশাপে যদুবংশ হইলেক ক্ষয় । দ্বন্দ্ব যুদ্ধ করি সবে করিল প্রলয় ॥ কামদেব আদি যেই কৃষ্ণের নন্দন । কৃতবৰ্ম্ম সাত্যকি যতেক যদুগণ ॥ পরস্পর যুদ্ধ করি হইল সংহার। একজন যদুকুলে না রহিল আর ॥ যোগে তনু ত্যজিলেন রেব তারমণ । নিম্ববৃক্ষ আরূঢ় ছিলেন নারায়ণ ॥ ব্যাধ এক আসি বাণে বিন্ধিল চরণ । তাহে ত্যজিলেন প্রাণ শ্ৰীমধুসূদন ॥ পাণ্ডবকুলের নাথ দেব জনাৰ্দ্দন । র্তাহার বিয়োগে হ’ল সকল মরণ ॥ কি করিব রাজ্যধন কি কাজ জীবনে । সকল নিরাশ হ’ল গোবিন্দ বিহনে ॥ গাণ্ডাব ধরিতে মম শক্তি নাহি আর । দশদিক শূন্ত দেখি সকলি অন্ধকার ॥ মুঘলপর্বের কথা অপূর্ব ঘটন। পয়ার প্রবন্ধে কাশীদাস বিরচন ॥ যুধিষ্ঠিরের বিপাপ । অৰ্জুনের বাক্য শুনি, যুধিষ্ঠির নৃপমণি, পড়িলেন ধরণী উপর । ভীমসেন মাদ্রীস্বত, ভদ্র কৃষ্ণ পরীক্ষিত, লোটাইয়৷ ধূলায় ধূসর ॥ চিত্রের পুত্তলি প্রায়, ভুমে গড়াগড়ি যায়, প্রাণধন গোবিন্দ বিহনে ।