পাতা:কোন পথে? - সুভাষ চন্দ্র বসু.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাদের সঙ্গে লড়াই কার ? যে তার থেকে হটে আসবেন তা আশা করা দুরাশা। অবস্থার বিপাকে এবং জনমতের চাপে বাধ্য হয়ে তিনি অনেক কিছু করতে পারেন, কিন্তু তাকে দিয়ে দেশব্যাপী সংগ্রাম শুরু করানো যাবে না । সঁতারে শক্তি পরীক্ষার জন্যে জলে ঝাঁপিয়ে পড়া এক কথা, কিন্তু জল দেখে যখন হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে তখন পিছন থেকে ধাক্কা খেয়ে জলে পড়া একেবারে অন্য কথা । ১৯২১ সালের ইয়ং ইণ্ডিয়া-য় উদ্দীপনাময় প্ৰবন্ধগুলির সঙ্গে ইদানীং সাপ্তাহিক কাগজ হরিজন-এ যে পদার্থ প্ৰকাশ হচ্ছে তার তুলনা করে দেখুন, পার্থক্যটা সঙ্গে সঙ্গে আপনার নজরে পড়বে । আমরা যে জগতে বাস করছি তা নিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে এবং জগতের পরিবর্তনের সঙ্গে সেই জগতের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যেও পরিবর্তন ঘটছে। আজকের সমস্যা কেবলমাত্ৰ প্ৰত্যক্ষ সংগ্রাম শুরু করার সমস্যা নয় । সে সংগ্রাম সাফল্যের সঙ্গে চালাতে হবে- যদি একান্ত তা শুরু করতে হয়-অন্যথা তা প্ৰত্যক্ষ সংগ্ৰাম হবে না, তা হবে বিশ্বাসঘাতকতা । সেই সংগ্রামকে চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পৰ্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার এবং মধ্যপথে সংগ্রাম পরিহার না করার প্রশ্নও এই সঙ্গে জড়িত। আরেকবার স্পষ্টভাষী হয়ে একথা আমরা বলে রাখতে চাই যে, বর্তমান ওয়ার্কিং কমিটি যদি প্ৰত্যক্ষ সংগ্রাম শুরুও করে, বামপন্থীদের মনে এই আশঙ্কা থেকে যাবে যে, যে কোন সময়ে চৌরিচৌরা বা হরিজন আন্দোলন, অথবা তাদেরই কোন নব্যরূপ দেখা দিতে পারে এবং শক্তিতে ও ব্যাপকতায় আন্দোলন যখন গুরুতর আকার ধারণ করবে তখন তাকে বন্ধ করে দেবার প্রয়াস হতে পারে । আমাদের প্রশ্ন করা হতে পারে, এই আশঙ্কা কি যুক্তিসঙ্গত ? অবশ্যই, তা না হলে যুদ্ধ ঘোষণা হবার পরেও বামপন্থীদের বিরুদ্ধে হিংস্ৰ জেহাদ পুরোমাত্রায় চালিয়ে যাওয়া হত না । সমস্ত প্ৰদেশ থেকে বামপন্থীদের বিরুদ্ধে এই জেহাদের খবর নিয়ত আসছে এবং ফরওয়ার্ড ব্লকের ক্ষেত্রে তা প্ৰতিহিংসায় পৰ্যবসিত হয়েছে। স্বভাবতঃ ওয়ার্কিং কমিটির যা কিছু আক্ৰোশ ৰাংলাদেশে কেন্দ্রীভূত এবং