বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:গৃহশ্রী - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গৃহশ্ৰী SS ক্ষীণ দীপ শিখার আলোকে আমার জ্যেষ্ঠ ভগিনী যখন রামায়ণ ও মহাভাবত সুর করিয়া পড়িতেন, তখন আমার মন এই সংসার হইতে এক উন্নততর পবিত্র রাজ্যে প্ৰবেশ করিত। ঠাকুরমাতার মুখে ধ্রুব ও প্ৰহলাদের উপাখ্যান শুনিয়া যে আনন্দ ও শিক্ষা পাইয়াছিলাম, আর কিছুতে তাহ পাই নাই। ধ্রুব পিতার সভা তইতে তাড়িত হইয়া কঠিন অভিমানে ফুপিয়া ফুপিযা কঁাদিতেছিল, তাহার মাযেব একটি কথায় সে আরাধনার পথ পাইল,-মায়ের কথায় পাচ বৎসরের ছেলের কি পরিবর্তন ঘটিল ! অপূর্ব বিশ্বাসে পাচ বৎসরের ছেলে ঘোব রজনীর আঁধারে চলিয়া গেল-কাহাকে পাইতে ? যাহাকে কত প্ৰবীণ যোগী আজন্ম তপস্যা করিয়াও পান নাই ; যাহার পাদপদ্মের জন্য বিশ্ব জুড়িয়া কান্না উঠিয়াছে; যাহাকে কে পাইয়াছে জানি না, কিন্তু যাহাকে পাইবার জন্য স্ত্রী-পুরুষ একত্র হইয়া ছুটিয়াছে ; ঐক্লাব পােচ বৎসরের শিশু বনে বনে তঁহারই সন্ধানে পাগলের মত ছুটিল। কত উপবাস, কত তপস্যা, কত কান্নার স্রোত বহিয়া গেল । অবশেষে সেই বনের ফুলগুলি একত্র হইয়া বনমালা হইযা গেল, তাহদের অপূৰ্ব সুগন্ধিতে বালক দিশেহারা ও চঞ্চল হইয়া উঠিল,-সরোবরের পদ্মগুলি যেন একত্ৰ হইয়া এক বিরাট পাদপদ্মের আভাস দেখাইল ; আকাশের নক্ষত্রগুলির দীপ্তি রাজরাজেশ্বরের অপূৰ্ব মুকুটমণি হইল, সমস্ত বিশ্বের কৃষ্ণ ও নীলজ্যোতি এক বরাবপুর কান্তিস্বরূপ হইল, ধ্রুব চক্ষের জলে কি দেখিল, কি যেন পূর্ণরূপে.দেখিতে পাইল না। ;-তাহার কর্ণ শত শত বীণাধবনি শুনিল, তাহার নাসিক শত শত কুসুমের সুরভিতে মত্ত হইল। কিন্তু সেই রূপ চক্ষের জলে সে ভাল দেখিতে পাইল না। সেই ধ্রুবের মূৰ্ত্তি— যোগীর মত বালকের তন্ময়ভাব, প্ৰবীণের অনায়ত্ত ভক্তিযোগ লাভ-সেই পরমানন্দের আভাস, আমি যাহা ঠাকুরমাতার মুখে পাইয়াছিলাম, তাহা (4-g??