চোখে ওসব পড়িল না, সে সভয়ে শুধু বৌএর সুস্থ ও সুন্দর শরীরটি দেখিয়া মনে মনে সকাতর হইয়া রহিল।
বাড়ন্ত বৌ এনেছ, না গো?—বলিল সকলে।
হ্যাঁ বাছা, জেনে শুনেই এনেছি, ছোট মেয়ে ছেলেরও পছন্দ নয়, আমারও নয়। একা আর পেরে উঠিনে মা সংসারের ঘানি টানতে, বড় সড় বৌটি এল শেখাতে হবে না কিছু, নিজেই সব পারবে।—বলিয়া শ্যামা কষ্টে একটু হাসিল।
তা, মন্দ কি হয়েছে বৌ? প্রিতিমের মত মুখখানা। সকলে বলিল।
তাই নাকি? শ্যামা ভাল করিয়া সুবর্ণের মুখের দিকে চাহিল। তা হইবে।
বিবাহ উপলক্ষে বকুল আসিয়াছিল, রাখালের সঙ্গে মন্দাও আসিয়াছিল। বকুল আসিয়াছিল তিন দিনের জন্য, বিবাহের হৈ চৈ থামিবার আগেই সে চলিয়া গেল। বৌকে ভাল লাগিয়াছে বকুলের। যাওয়ার সময় এই কথা সে শ্যামাকে বলিয়া গেল।
শ্যামা বলিল, তোর কি পছন্দ বুঝিনে বাবু, এত কি ভাল যে একেবাবে গদগদ হয়ে গেলি?
বকুল বলিল, দেখো, ও বৌ যদি ভাল না হয় কান কেটে নিও আমার, মা-মরা মেয়ে একটু আদরযত্ন পাবে যার কাছে প্রাণ দেবে তার জন্যে। কি বলছিল জান? বলছিল তুমি নাকি ওর মার মত।
তাই নাকি? তা হইবে।
বকুল চলিয়া গেল, বৌ চলিয়া গেল, বিবাহ বাড়ি নিঝুম হইয়া আসিল, রহিয়া গেল মন্দা। এই তো সেদিন শ্যামা মন্দার আশ্রয় ছাড়িয়া আসিয়াছে, দাসীর মত খাটিয়াছে মন্দার সংসারে, অহোরাত্র মন যুগাইয়া চলিয়াছে, সে স্মৃতি ভুলিবার নয়। একবিন্দু কৃতজ্ঞতা নাই শ্যামার, মন্দা রহিয়া গেল বলিয়া সে এতটুকু কৃতার্থ হইয়া গেল না। কয়েক বছর আশ্রয় দিয়াছিল বলিয়া শ্যামার কাছে কি সমাদর মন্দা আশা করিয়াছিল সেই জানে, বোধ হয় ভাবিয়াছিল আজও শ্যামার উপর কর্তৃত্ব করিতে পারিবে। কিন্তু