পাতা:জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ - প্রফুল্লকুমার সরকার (১৯৪৭).pdf/১২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
জাতীয় আন্দোলনে রবীন্দ্রনাথ

পাশ্চাত্য জগতের শ্রেষ্ঠ চিন্তাধারার বাহক ও পোষক ইংরেজদের বীরসুলভ মানবতার দোহাই না দিয়া পারিতেছি না।”......

 কিন্তু দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ আরম্ভ হইবার পর আধুনিক সভ্যজাতিদের তথা পাশ্চাত্যের বৈজ্ঞানিক সভ্যতার প্রতি তাঁহার আস্থা একেবারেই লোপ পাইয়াছিল বলিলেই হয়। বিশেষত, বৃটিশসাম্রাজ্যবাদীরা গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার নামে বর্তমান মহাযুদ্ধ আরম্ভ হইবার পরও পরাধীন ভারতের প্রতি যে ব্যবহার করিতেছেন, তাহাতে তাঁহার আজন্মের শিক্ষা ও সংস্কারপোষিত শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের উৎস একেবারে শুকাইয়া গিয়াছিল। স্বদেশ ও স্বজাতির ভবিষ্যৎ চিন্তা করিয়া তিনি গভীর উদ্বেগ অনুভব করিয়াছিলেন। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ১লা বৈশাখ তাঁহার শেষ জন্মোৎসব অনুষ্ঠানে ‘সভ্যতার সঙ্কট’ নামে দেশবাসীর নিকট তিনি যে বাণী প্রচার করেন, স্বদেশ, স্বজাতি ও বিশ্বমানবের কল্যাণ চিন্তায় তাহাই তাঁহার শেষ উক্তি। রবীন্দ্রনাথের গভীর দেশপ্রেম ও মানবপ্রীতির নিদর্শনরূপে ইহা চিরদিন অক্ষয় হইয়া থাকিবে। এই অমর বাণী হইতে কিয়দংশ উদ্ধৃত করা প্রয়োজন মনে করি।

 পাশ্চাত্য সভ্যতার আভ্যন্তরীণ কদর্যমূর্তির স্বরূপ প্রকাশ করিয়া রবীন্দ্রনাথ বলেন:—“এই বিদেশীয় সভ্যতা, যদি একে সভ্যতা বলো, আমাদের কি অপহরণ করেছে তা জানি। সে তার পরিবর্তে দণ্ড হাতে স্থাপন করেছে যাকে নাম দিয়েছে