বেরিয়ে পড়ল। আমার মনে হল, সমুদ্রের নীল ঢাকনাটা কে খুলে ফেলেচে, আর ভিতর থেকে ধোঁয়ার মত লাখো লাখো দৈত্য পরস্পর ঠেলাঠেলি কর্তে কর্তে আকাশে উঠে পড়চে।
জাপানী মল্লারা ছুটোছুটি করচে কিন্তু তাদের মুখে হাসি লেগেই আছে। তাদের ভাব দেখে মনে হয়, সমুদ্র যেন অট্টহাস্যে জাহাজটাকে ঠাট্টা করচে মাত্র;—পশ্চিম দিকের ডেকের দরজা প্রভৃতি সমস্ত বন্ধ, তবু সে সব বাধা ভেদ করে এক একবার জলের ঢেউ হুড়মুড় করে এসে পড়ছে, আর তাই দেখে ওরা হো হো করে উঠচে। কাপ্তেন আমাদের বারবার বল্লেন,― ছোট ঝড় সামান্য ঝড়। এক সময় আমাদের স্টুয়ার্ড এসে টেবিলের উপর আঙুল দিয়ে এঁকে ঝড়ের খাতিরে জাহাজের কিরকম পথ বদল হয়েচে, সেইটে বুঝিয়ে দেবার চেষ্টা কর্লে; ইতিমধ্যে বৃষ্টির ঝাপটা লেগে শাল কম্বল সমস্ত ভিজে শীতে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছে। আর কোথাও সুবিধা না দেখে কাপ্তেনের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিলুম। কাপ্তেনের যে কোনো উৎকণ্ঠা আছে, বাইরে থেকে তার কোনো লক্ষণ দেখতে পেলুম না।
ঘরে আর বসে থাক্তে পারলুম না। ভিজে শাল মুড়ি দিয়ে আবার বাইরে এসে বস্লুম! এত তুফানেও যে আমাদের ডেকের উপর আছড়ে আছড়ে ফেলচে না, তার কারণ জাহাজ আকণ্ঠ বোঝাই। ভিতরে যার পদার্থ নেই তার মত দোলায়িত অবস্থা আমাদের জাহাজের নয়। মৃত্যুর কথা