বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:জীবনানন্দ সমগ্র (প্রথম খণ্ড).pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তা হলে চাবিট বের করে নিতে হবে, দেখতে হবে রেফ্রিজারেটরে কী কী রয়েছে। নিশ্চয়ই নতুন কিছু আমদানি হয়েছে । পুরনো হালচাল বাতিল হয়েছে কিছু তো বটেই ; অদলবদল কতদূর গিয়ে দাড়াল দেখা যাক। খুব ঠাণ্ড জল—বরফ দেওয়া সাধারণ কলের জল । কার্লসবগড সোয়াপ্লের জল পাওয়া যাবে নিশ্চয়ই, আগে যে-সব জায়গায় এগুলো থাকত, এখনও যদি সেখানেই রাখা হয়, তা হলে অন্ধকারে চোখ বুজে টেনে নেবে বোতলের পর বোতল । এতটা পিপাসা না পেলে, নীচে জলের পাখার ব্যবস্থা থাকলে নমিতা দাশগুপ্তের দোতলার ফ্ল্যাটে ঢোকবার কোনো দরকারই বোধ করত না নিশীথ । কিন্তু জলের তাড়না তাকে স্থির থাকতে দিচ্ছে না । জলের তেষ্টা মিটলে মিটসেফ খুলে ক্ষিধে মেটাতে হবে । সিড়ি বেয়ে দোতলায় গিয়ে দাড়াল নিশীথ । যেদিকে তাকায় সেদিকেই কণপেট—দেণতলণর অণদিগন্ত ভিত্তিচিত্রগুলোকে ঢেকে ফেলে পরিকল্পনা ও রঙের বহারে নক্সায় অভিভূত করে রেখেছে সব। জয়পুর গালিচা হয় ত এগুলো ? ওগুলো মির্জাপুরী । দোতলায় সিডির মুখে মস্ত বড় হল ঘরটা । হল ঘরে একটু এগিয়ে পিছিয়ে বঁ হাতি ডান হাতি করলেই ড্রেসিংরুম, ড্রয়িংরুম, খাবার ঘর, দুটো শোবার ঘর, গৌশলখানা সবই চোখ বুলিয়ে দেখে নেয় নিশীথকে । নিশীথ ও দেখে তাদের । এদের যদি গলা থাকত, কী বলত নিশীথকে ? এ সব ঘর দেণর তো নিশীথের পেশমান জিনিস ছিল, তার জীবনের সেই সব বেত লসিদ্ধির দিনে । হলঘরে মাথণব ওপরে বেশ একটা প্রকাণ্ড চৌকো সন্দেশের মত বাতি জ্বলছে । বেশ দেখাচ্ছে ঘরটাকে । গালিচার সমারোহ, সোফা, কুশন, এনসাইক্লোপিডিয়া মোটা-মোটা দামি বই-ঠাস আণ লমারি—কিন্তু বাতিটা জ্বালিয়ে রাখবার কী দরকার ছিল সারণরণত । কেউ দেখবে না, অথচ ঠাটটা জ্বলে যাবে, এই জন্যে ? গোটা দুই বড়-বড় ফ্যান রয়েছে এই ঘরে । বাতি নিভিয়ে ফ্যান খুলে নিশীথ তা হলে এবার সেণ ফণয় শুয়ে থাকবে ? আগে জল চাই । খাবার ঘরে ঢুকলেই জল, ওয়াটার কুলারে—অঢেল জল । ভগবতে গিয়ে জলের তেষ্টা অনেকটা কমে গেছল নিশীথের । জল খাবে বটে কিন্তু জিতেন দাশগুপ্ত কী করছে ? কিন্তু জল খেতে হল । রেফ্রিজারেটরের থেকে বোতল বের করে নয়—এমনিই খাবার ঘরের দিকে এগিয়ে গেল S&