জুলেখার কৌশল A -- বাধা দিয়া কম্পিতৃকণ্ঠে সেলিনা কহিল, “চুপ কর, আর তোকে কিছু বলিতে হইবে না। তুই অনেক পাপ করিয়াছিস, আর মিথ্যাকথার উপরে মিথ্যাকথা ব’লে পাপের বোঝা ভারি করিস কেন ?” বলিতে বলিতে সেলিনা ছুটিয়া চলিয়া গেল। আজ কাল জুলেখার সহিত, একা থাকিতে সেলিনার বড় ভয় করে। সেলিনা তথা হইতে অন্তৰ্হিত হইলে, অনেকক্ষণ জুলেখা নতমুখে সেইখানে এক বসিয়া ভাবিতে লাগিল । দত্ত সাহেব হত্যাকারীর অনুসন্ধানে যেরূপ বদ্ধপরিকর হইয়াছেন, এবং সেলিনার যেরূপ মনের চাঞ্চল্য, তাহাতে যদি তাহার মুখ হইতে ঘূণাক্ষরে কোন কথা প্ৰকাশ পায়, তাহা হইলে নিজের যে সৰ্ব্বনাশ ঘটিবার সম্ভাবনা, এখন জুলেখা তাহা বেশ বুঝিতে পারিয়াছে। দারুণ দুর্ভাবনার সূত্রপাতে জুলেখার মন নিরতিশয় উদ্বেলিত হইতে লাগিল। জুলেখা অনেক চিন্তার পর ঠিক করিল, আজই একবার ডাক্তার বেণ্টউডের সহিত দেখা করিয়া যাহা হয় একটা বন্দোবস্ত করিতে• হইবে। র্তাহার কাছে টম্বরু আছে-ভয় কি ? টম্বরু সব দিক রক্ষা করিবে। টম্বরু একপ্রকার ক্ষুদ্র প্রস্তরখণ্ড ; ইহা একান্ত দুপ্ৰাপ্য। ছোটনাগপুর অঞ্চলে খাড়িয়া জাতিরা এই প্রস্তরখণ্ডের অত্যন্ত সম্মান করিয়া ९ gक ! যখন ডাক্তার বেণ্টউডের সহিত সাক্ষাৎ করা স্থির-সিদ্ধান্ত হইল, তখন জুলেখা কাহাকেও কিছু না বলিয়া, বাটী হইতে বাহির হইয়া আলিপুরের দিকে চলিতে আরম্ভ করিল। জুলেখার উপরে সেলিনার মাতার কিছুমাত্র শাসন ছিল না ? সে যখন মনে করিত, বাটীর বাহির হইয়া বাইত ; যখন ইচ্ছা হইত, বাটীতে ফিরিয়া আসিত। কখনও যদি সেলিনার মাতা তাহাকে তাহার দীর্ঘ নিরুদেশের কারণ জিজ্ঞাসা করিতেন,