পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

সেই পরিবর্ত্তন তেমনই পুষ্ট হইয়া উঠিয়াছিল। সুবিধার প্রধান উপকরণ—অর্থ। তাহার জন্য প্রভাতকে ভাবিতে হইত না। শিবচন্দ্র যাহাই করুন, তাহার আবশ্যক বাড়িয়াছে বলিয়া নবীনচন্দ্র গোপনে প্রতিমাসে তাহাকে পূর্ব্বাপেক্ষা অধিক অর্থ পাঠাইতেন। তদ্ভিন্ন তাহার আপনারও অর্থ ছিল। কৃষ্ণনাথ বিবাহকালে জামাতাকে যে অর্থ দিয়াছিলেন, শিবচন্দ্র তাহা স্পর্শ করেন নাই। সে টাকা প্রভাতের নামে ব্যাঙ্কে জমা ছিল। শিবচন্দ্র সে টাকার কথা জিজ্ঞাসা করিতেন না। যৌবনে — অভিভাবকহীন অবস্থায় প্রচুর অর্থের মত কুসঙ্গী আর নাই। সংসারের ভাব বুঝিবার পূর্ব্বে মানুষ ব্যয় করিতেই ভালবাসে—তাহার আনন্দ ব্যয়ে, সঞ্চয়ে নহে।

 পূজার অবকাশ শেষ হইবার পূর্ব্বেই প্রভাত কলিকাতায় ফিরিয়া গেল; পরীক্ষা নিকটবর্ত্তী।

 প্রভাত চলিয়া যাইবার পর শিবচন্দ্র এক দিন নবীনচন্দ্রকে বলিলেন, “নবীন, আমার সন্দেহ হইতেছে, প্রভাত বড় অমিতব্যয়ী হইয়া উঠিয়াছে। তাহার আচরণ ও ব্যবহার লক্ষ্য করিয়া আমি শঙ্কিত হইয়াছি। এখন হইতে সাবধান করা প্রয়োজন।”

 নবীনচন্দ্র মৃদুস্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি কি তাহাকে কিছু বলিয়াছেন?”

 “না। আমি কিছু বলি নাই। আমি সেবার তিরস্কার করিয়াছিলাম, তাহাতে তাহার মন ভারি হইয়াছে। তুমিও তাহাতে কিছু অসন্তুষ্ট হইয়াছ। তাই আমি কিছু বলি নাই।

১০১