নবীনচন্দ্র প্রভাতকে লইয়া অন্তঃপুরে চলিলেন। অন্তঃপুরে পদার্পণ করিয়া প্রায় এক সময়েই নবীনচন্দ্র ডাকিলেন,—“দিদি!” প্রভাত ডাকিল,—“পিসীমা!”
পিসীমা রন্ধন করিতেছিলেন; হাতা বেড়ী ফেলিয়া বাহির হইয়া আসিলেন। পার্শ্বস্থ আমিষ-পাকশালা হইতে কমল ও প্রভাতের জননী আসিলেন।
প্রভাত পিসীমা’কে প্রণাম করিয়া তাঁহার পদধূলি গ্রহণ করিতে যাইতেছিল, তাহার জননী নিষেধ করিয়া বলিলেন, “ঠাকুরঝি রাঁধিতেছেন, যেন ছুঁইয়া দিস্ না!”
পিসীমা তাঁহার দিকে ফিরিয়া বলিলেন, “বড়বৌ, তোমার সব তাতেই বাড়াবাড়ি। ও ছুঁইলে কি হইত? না হয়— কাপড়খানা ছাড়িয়া ফেলিতাম।”
ইহার পর প্রভাত মাতাকে প্রণাম করিল, এবং কমলের প্রণাম গ্রহণ করিল।
শ্যামের মা একটা ‘প্লেতে’য় তরকারী ধৌত করিয়া আনিতেছিল। প্রভাতের পদে সঞ্চিত ধূলি দেখিয়া সে বলিল, “দাদাবাবু, পায়ে ধূলা কেন?”
পিসীমা স্নেহসিক্ত তিরস্কারের স্বরে বলিলেন, “হাঁটিয়া আসিয়াছিস্ বুঝি?”
প্রভাত বলিল, “বিলের কাছে গাড়ী ছাড়িয়া আসিয়াছি।”
“রৌদ্রে হাঁটিতে আছে? আহা মুখ শুকাইয়া গিয়াছে! যা’—স্নান করিয়া আয়।”
৯