পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

বলে অল্পদিনেই যখন বুঝিয়াছিলেন, তাঁহার অবর্ত্তমানে তাহারা কোনরূপেই কার্য্য চালাইতে পারিবে না, তখন তাহাদিগকে কার্য্য হইতে অবকাশ লওয়াইয়া গৃহে প্রেরণ করিয়াছিলেন। তাহার প্রধান কারণ, তাঁহার পদোন্নতি অনেকের ঈর্ষ্যার ও মনোবেদনার কারণ হইয়া উঠিয়াছিল; তাহারা যে সুযোগ পাইলেই তাঁহার অনিষ্ট করিবে, ইহা তিনি বিলক্ষণ জানিতেন। যে তীক্ষ্ণপ্রতিভাবলে তিনি তাহাদিগের অনিষ্টচেষ্টা ব্যর্থ করিয়াছিলেন, সেই প্রতিভাহীন পুত্ত্রকে ও ভ্রাতুষ্পুত্ত্রকে লইয়া পাছে তাঁহাকে বিপন্ন হইতে হয়,এই আশঙ্কায় তিনি তাহাদিগকে আর কার্য্যে ব্রতী রাখেন নাই। কিন্তু তাঁহার কৃপায় তাঁহার জ্ঞাতি, কুটুম্ব, স্বদেশীয় ও স্বজাতীয় অনেকে নবাব সরকারে কার্য্য পাইয়াছিলেন। তখন লোকে সমাজ বলিতে ব্যক্তির সমষ্টি না বুঝিয়া পরিবারের সমষ্টি বুঝিত; তখনও আত্মীয় স্বজনাদির উপকার দেবসেবারই মত খয়রাতখাতে খরচ পড়িতে আরম্ভ হয় নাই।

 কর্ম্মস্থানেই তাঁহার মৃত্যু হয়। তাঁহার চারি পুত্ত্র ও এক ভ্রাতুষ্পুত্ত্র একত্র এক সংসারে বাস করিতে লাগিলেন। তখনও বাঙ্গালায় “ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই” হইবার ব্যবস্থা হয় নাই। এই সময় হইতে লক্ষ্মী চাঞ্চল্য প্রকাশ করিতে লাগিলেন। পরিবার বাড়িতে লাগিল, সঙ্গে সঙ্গে আশ্রিতদিগের সংখ্যাও বাড়িতে লাগিল। অতিথি আসিলে ফিরাইবার রীতি নাই; ক্রিয়াকর্ম্মে ব্যয়সংক্ষেপ করাও হইয়া উঠে না; কারণ, যে অবস্থা-পরিবর্ত্ত-

১৪