বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

অষ্টম পরিচ্ছেদ।

পল্লী লক্ষ্মী।

সন্ধ্যাকালে সতীশচন্দ্র গৃহে ফিরিল। তখন পাখীরা নীড়ে নিদ্রিত, কৃষক ক্ষেত্র হইতে প্রত্যাগত, গৃহে গৃহে শিশুরা ঘুমাইয়া পড়িতেছে, পল্লীর কলরব ক্রমেই শান্ত হ‍ইতেছে। চন্দ্র কেবল উদিত হইতেছে,—জ্যোৎস্নালোকে ধূলিধূসর রাজপথ বৃহৎ অজগরের মত লক্ষিত হইতেছে। তৃণদলে কেবল শিশির সঞ্চিত হইতেছে। শীতের আকাশে তারকাকুল উজ্জ্বল দেখাইতেছে। সতীশচন্দ্রের গৃহখানি অল্প দিন সম্পূর্ণ নির্ম্মিত হইয়াছে, গৃহের প্রাঙ্গনে তরুলতা এখনও তেমন বর্দ্ধিত হয় নাই। পূর্ব্বে দক্ষিণদ্বারী চালাঘর ছিল। সতীশচন্দ্র যখন ইমারত গঠন করিতে চাহিল, তখন মা বলিলেন, “অগ্রে বাহিরের অংশ কর।” কিন্তু সতীশচন্দ্র তাহা শুনিল না; অগ্রে অন্তঃপুর শেষ করিল। বাহিরের অংশ এই বৎসর মাত্র শেষ হইয়াছে। ভূমির উপর গৃহের ভিত্তিস্তর উচ্চ; গৃহ অলঙ্কারভারাক্রান্ত নহে,—সরল শোভায় সুন্দর, পল্লীগ্রামের বৃক্ষলতার শ্যামশোভার মধ্যে ছবিখানির মত প্রতীয়মান হয়; তাহাতে উপযোগিতা ও শোভা উভয়ই বিদ্যমান।

 বাহিরে বসিবার ঘরের পার্শ্বের কক্ষে বেশ পরিবর্ত্তন করিয়া, হস্তপদাদি-প্রক্ষালনের পর সতীশচন্দ্র অন্তঃপুরে প্রবেশ করিয়া ভাকিল, “মা!”

 মা-পুত্ত্রের জন্য একখানি গালিচা পাতিয়া দিলেন। সতীশচন্দ্র