পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নবম পরিচ্ছেদ।

বিবাহের পর।

মাঘ মাসে শোভার সহিত প্রভাতের বিবাহ হইয়া গেল। নববধূ শ্বশুরালয়ে আসিল। পাকস্পর্শাদি যথারীতি সম্পন্ন হইয়া গেল। শ্বশুরালয়ে নববধূ শোভাময়ীর আদরযত্নের অন্ত রহিল না। পিসীমা’র ও কমলের যেন আর আহার নিদ্রা নাই; উভয়েই সর্ব্বদা তাহাকে লইয়া ব্যস্ত। নবীনচন্দ্র—কেবল কিসে বধূর কোন রূপ অসুবিধা না হয়, তাহার জন্য সর্ব্ববিধ আয়োজনে ব্যস্ত। বধূর সঙ্গে যে দাসদাসীরা আসিয়াছিল—তাহারাও যেন কুটুম্বের মত আদর পাইতে লাগিল। কিন্তু দাসীটির যেন কিছুতেই মন উঠে না। তাহার ব্যবহারে মনে হইত, সে পদে পদে মনে করিতেছে, এত আদর যত্নও যেন শোভার পক্ষে যথেষ্ট নহে—সে বিষয়ে সে মনোযোগ না দিলে হইবে না। তাহার এইরূপ ব্যবহারে সকলেই বিস্মিত হইলেন; কিন্তু পিসীমাও কিছু বলিলেন না; কুটুম্ববাড়ীর লোক—কিছু বলিলে নিন্দা হইবে।

 এই আদর যত্নে শোভা যে প্রীতা না হইল, এমন নহে। কিন্তু সে আদর যত্ন প্রকাশের প্রণালী তাহার নিকট কেমন নূতন বলিয়া বোধ হইত। প্রায় এক পক্ষ কাল পরে পিত্রালয়ে প্রত্যাবৃত্ত হইয়া সে তাহার ভ্রাতৃজায়াদিগের নিকট শ্বশুরালয়ের সকলের ব্যবহারাদির যে অভিনয় করিত, তাহাতে যতই নিপুণতা থাকুক, শিষ্টতা ছিল না। তাহার জননী জানিতে পারিয়া একদিন তিরস্কার

৭৪