পাতা:নাগপাশ - হেমেন্দ্রপ্রসাদ ঘোষ.pdf/৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নাগপাশ ।

প্রস্তাব ও যাওয়া, উভয়ের মধ্যে অতি অল্প সময়ের ব্যবধান হেতু শিবচন্দ্রের অনুমতি আনাইবার সুবিধা হয় নাই। যাইবার দিন কৃষ্ণনাথ শিবচন্দ্রকে পত্র লিখিলেন। প্রভাত পত্রে লিখিল, সে বিশেষ আপত্তি করিয়াছে; কিন্তু কৃষ্ণনাথ শুনিলেন না।

 এই পত্র পাইবার কয় দিন পূর্ব্বে শিবচন্দ্র পুত্ত্রের কোনও সহপাঠীর নিকট শুনিয়াছিলেন, তাঁহার নিষেধহেতু প্রভাত ছাত্রাবাস ত্যাগ করিয়া শ্বশুরালয়ে যায় নাই বটে; কিন্তু অধিক সময় সেখানেই কাটায়, তাহার ছাত্রাবাসে বাস ক্রমেই সংক্ষিপ্ত হইয়া আসিতেছে। শুনিয়া তিনি বিরক্ত হইয়াছিলেন। এই পত্র পাইয়া তিনি আরও বিরক্ত হইলেন। কিন্তু হৃদয়ে বিরক্তির অপেক্ষা স্নেহের অভিমানই প্রবল হইয়াছিল; প্রভাত তাঁহার অনুমতির অপেক্ষাও করিল না? তিনি প্রকৃত অবস্থা বুঝিতে পারিলেন না। মনের অবস্থা স্থিরভাবে বিবেচনার পক্ষে অনুকূল নহে। তিনি নবীনচন্দ্রকে এ কথা না জানাইয়াই উত্তরে প্রভাতকে লিখিলেন;—“তুমি আমার অনুমতির অপেক্ষা রাখ নাই। সুতরাং তোমাকে কোনও কথা লিখাই নিষ্ফল। তুমি বড় হইয়াছ। তোমার হিতাহিত তুমি বুঝিতে পার। এখন আর তোমার কার্য্য বা কর্তব্য সম্বন্ধে আমার অনুমতি বা উপদেশ অনাবশ্যক, তাহা আর দিব না।”

 নবীনচন্দ্র দেখিলেন, অগ্রজের মুখ অন্ধকার; জিজ্ঞাসা করিলেন, “প্রভাতের পত্র পাইয়াছেন?”

 শিবচন্দ্র উত্তর করিলেন, “পাইয়াছি?”

৮০