পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. . . . . lixi %'r বৰ্ত্তমান সভ্যতা বনাম বৰ্তমান যুদ্ধ। ১৬৭ ( ७ ) . আমি পূর্বে বলেছি যে, কোন যুগের কোনও সভ্যতা একেবারে নির্দোষ কিম্বা একেবায়ে নিগুণ নয়। ইউরোপের মধ্যযুগের স্বপক্ষে যে কিছু বলবার নেই, তা নয়। অন্ধকারেরও একটা অটল সৌন্দৰ্য আছে এবং তার অন্তরেও গুপ্ত শক্তি নিহিত থাকে। যে ফুল দিনে ফোটে, রাত্রে তার জন্ম হয়— এ কথা আমরা সকলেই জানি। সুতরাং নবযুগে যে সকল মনোভাব প্রস্ফুটিত হয়ে উঠেছে তার অনেকগুলির বীজ মধ্যযুগে বপন করা হয়েছিল। কিন্তু নবযুগের আলোক না পেলে সে সকল বীজ বড়জোর অঙ্কুরিত হত,-তার বেশি নয়। ইউরোপের নবসভ্যতার আলোক, সূর্য্যের আলো নয় যে, তা কেউ নেবাতে পারে না। এ আলো প্ৰদীপের আলো, আকাশ থেকে পড়ে নি, মানুষে নিজহাতে রচনা করেছে; সুতরাং ইউরোপের নিশাচররা এ আলো নেবাবার বহু চেষ্টা করেছে। মধ্যযুগের সঙ্গে পদে পদে লড়াই করে নবযুগকে অগ্রসর হতে হয়েছে। রিফরমেসনকে আত্মরক্ষার জন্য প্রায় দেড়শ’ বছর তাবিরাম যুদ্ধ করতে হয়েছে। ফরাসী-বিপ্লব আত্মরক্ষার জন্য যে যুদ্ধ করতে বাধ্য হয়, তা ইউরোপময় ব্যাপ্ত হয়ে পড়েছিল। “স্বাধীনতা, সাম্য ও মৈত্রী’র মন্ত্রে দীক্ষিত নেপোলিয়েন-সমগ্ৰ ইউরোপকে প্ৰায় নিঃক্ষত্ৰিয় করেছিলেন। স্বাধীনতার অবতার পরের স্বাধীনতা অপহরণ করা, মৈত্রীর অবতার পরের শক্ৰতা করা এবং সাম্যের অবতার যে ইউরোপের একেশ্বর হওয়া তার জীবনের ব্রত করে তুলেছিলেন, এ কথা মনে করলে মানব সভ্যতা সম্বন্ধে হতাশ হয়ে পড়তে হয়। কিন্তু আমরা আজ একশ’ বছর পরে নেপোলিয়ানের এই