পাতা:নৈবেদ্য - জলধর সেন.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৈবেদ্য মর্টগেজ ডিড় রেজোষ্ট্রী করা। দেখিলাম, মকৰ্দমা করা অনর্থক ; সর্বস্ব বিক্রয় করিয়া, নগদ টাকা যাহা ঘরে ছিল তাহ সমস্তই বাহির করিয়া সুদসমেত সমস্ত দেন শোধ করিলাম, বাস্তু ভিটাখানি অতি কষ্টে উত্তমর্ণের গ্ৰাস হইতে অব্যাহত রহিল। আমার বাল্যবন্ধু নব্য উকীল বিচক্ষণ সব্যসাচী বাবু আক্ষেপ করিয়া বলিলেন, “তুমি কি বোকা! মকৰ্দমা কোরলে হাইকোর্ট পৰ্য্যন্ত ত দেখা যেত। চেষ্টা না ক’রে কে এ ভাবে সর্বস্ব নষ্ট করে! আমরা আছি কেন?”—আমি সব্যসাচীকে উত্তমরূপ চিনিতাম; বলিলাম “ভাই তোমাদের বিলক্ষণ চিনি। যে টাকাটা দিয়া দেন শোধ করিালাম, মামলা করিলে সে টাকাটা তোমরা পাঁচজন সুহৃদেই ভাগ বাটােয়ারা করিয়া লইতে ; তাহার পর দেন শোধ করিতাম কি দিয়া ? পথে দাড়াইলেও তা কোন উপায় হইত না।” তাহার পর দেখিলাম, চতুর্দিক অন্ধকার। গ্রামের বিজ্ঞ মহোদয়েরা বলিতে লাগিলেন “ছোঁড়াটা একেবারে অপদাৰ্থ: সৰ্ব্বস্ব ঘুচুলে”। পিসিমার মুখে শুনি, মানের ঘাটে মেয়েরা বলাবলি করে সংসারটা আমিই ছারেখারে দিলাম। বিশবৎসর তখন আমার বয়স, জগতের চারিদিকে কত উৎসাহ, কত আনন্দ, সংসার রঙ্গমঞ্চে তখন আমার সুখময় জীবন-নাটকের অভিনয়রম্ভের সময়, সুদূর স্বপ্নলোক পৰ্য্যন্ত আমার কল্পনা-জাল বিস্তৃত, আকাশব্যাপী আমার আশা আকাঙ্ক্ষা ;-আর আমি কি না পদে পদে অবজ্ঞাত, বিড়ম্বিত, লাঞ্ছিত হইতে লাগিলাম ; শেষে পরিবার প্রতিপালন করাও আমার পক্ষে কঠিন হইয়া উঠিল। একদিন পিসিমা বলিলেন, ঘরে চাল নাই, একটা পয়সাও নাই। আমি কোন উত্তর দিলাম না, মুখে কথা বাহির না হইয়া চক্ষু দিয়া কতকগুলা অনাবশ্যক অশ্রু বাহির হইয়া পড়িল । কাপুরুষ আমি-আমি বাচিয়া থাকিতে আমার পিসিমা ও ভগিনী উপবাসে VV