পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৩৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম সংখ্যা । ] করিয়া, যে আসনে একদিন হুলাযুদ্ধ উপবেশন করিতেন, তথায় পশুপতি উপবিষ্ট বলিয়া অাক্ষেপ প্রকাশ করিয়া গিয়াছেন । বলা বাহুল্য, এস্থলে পশুপতির নাম গৃহীত না হইলেই ভাল হইত। হলায়ুধের জ্যেষ্ঠের নামই পশুপতি । তিনি বিবিধশাস্ত্রবিশারদ সাধুবাক্তি ছিলেন । তাহার স্মৃতি বড় নির্দয়রাপে বঙ্গসাহিত্যে পদবিদলিত হইয়াছে । বরেন্দ্রভূমি বুেনরাজবংশের আদিরাজ্য ড়িল না । বিজয়, বল্লাল ও লক্ষ্মণ ক্রমে ক্রমে তাহ পাল-নরপালগণের নিকট হইতে কাড়িয়া লইয়াছিলেন । বক্তিয়ারের আগমনসময়ে এই প্রদেশে সেনরাজবংশের সুদৃঢ় শাসন প্রতিষ্ঠিত না থাকায়, লক্ষণের পুত্ৰগণ আদিরাজারক্ষার্থ বরেন্দ্র পরিত্যাগ করায়, বক্তিয়ার তাহা কুড়াইয়া পাইয়াছিলেন । বঙ্গরক্ষাই লক্ষ্মণের পুত্ৰগণের লক্ষ্য ছিল, তাহাতে র্তাহাদের সম্পূর্ণরূপে কৃতকার্য হইবার কপ। মুসলমানের ইতিহাসেই দেখিতে পা ওয়া যায় । এরূপ অবস্থায় বক্তিয়ার খিলিজির বঙ্গবিজয়ে সেনরাজবংশীয় কোন নরপতিরই কলঙ্ক ঘোষিত হইতে পারে না । ঘটকদিগের গ্রন্থে যে পুরাতন জনশ্রুতি লিপিবদ্ধ আছে, তদনুসারে লক্ষ্মণসেনের পুত্র কেশবসেনের গৌড়রাজ্য পরিত্যাগ করিবার প্রমাণ প্রাপ্ত হওয়া যায়। কিন্তু কেশবসেন গৌড়রাজা পরিত্যাগ করিলেও, রাঢ় ও বঙ্গ পরিত্যক্ত হয় নাই । বক্তিয়ার খিলিজি পরিত্যক্ত গৌড়বিভাগই অধিকার করিতে সমর্থ হইয়াছিলেন ; অপরিত্যক্ত রাঢ় ও বঙ্গৰিভাগ অধিকার করিবার জন্ত তাহাকে দীর্ঘকাল যুদ্ধ করিয়া *ब्रिडखि हैरङ झहेब्राझिल । ब्राछ दक्विब्रांज्ञ ৰক্তিয়ার খিলিজির বঙ্গবিজয় । లిస్రిక খিলিজির জীবিত থাকা পৰ্য্যন্ত অধিকৃত হয় নাই ; ৰঙ্গ বক্তিয়ার খিলিজির মৃত্যুর পর অৰ্দ্ধশতাব্দী পর্য্যন্তও অধিকৃত হয় নাই – তাহার প্রমাণ মুসলমানের ইতিহাসেই প্রাপ্ত হওয়া যায় । বঙ্গ কবি পলায়নকলঙ্কের সয়ন্স কবিতায় বঙ্গসাহিত্য পূর্ণ করিয়াছেন , কিন্তু লক্ষ্মণাত্মজ বিশ্বরূপসেনের স্বদেশরক্ষার কীৰ্ত্তিকাহিনী ঘোষণা করিবার জল্প লেখনী চালনা করেন নাই । 瑕 লক্ষ্মণসেন তুৰ্ব্বলহস্তে রাজদণ্ড ধারণ করেন নাই । তাহার শাসনসময়ে গৌড়ীয় হিন্দুসাম্রাজ্য দক্ষিণ ও পশ্চিমে বহুদূর পর্য্যন্ত বিস্তুত হইবার প্রমাণ পাওয়া যায়। অদ্যাপি মিথিলা প্রদেশে “লক্ষ্মণ-সংবৎসর” প্রচলিত পাকিয়া লক্ষ্মণসেনের রাজ্যবিস্তারের . পরিচয় প্রদান করিতেছে । বিশ্বরূপসেনের তামশাসনে লিখিত অাছে ঃ-- “বেলায়াং দক্ষিণান্ধেমুসলধরগদাপাণিসংবাসবেদ্যাং ক্ষেত্রে বিশ্বেশ্বরস্ত ফরদসিবরণ শ্লেষগঙ্গোৰ্শ্বিভাজি । ষ্ট্রারোৎসঙ্গে ত্রিবেণাং কমলভবমখারস্তনির্বাজপুতে যেনোচ্চৈযজ্ঞযুপৈঃ সহ সমরজয়স্তম্ভমালা স্তধারি ॥” এই বর্ণনার সহিত লক্ষ্মণসেনদেবের “অশ্বপতি-গজপতি-নরপতি-রাজত্ৰয়াধিপতি"নামক সুদীর্ঘ উপাধির সম্পূর্ণ সামঞ্জস্ত . দেখিতে পাওয়া যায়। এই সুবিস্তৃত গৌড়ীয় হিন্দুসাম্রাজ্য যে প্রণালীতে শাসিত হইত, তাম্রশাসনে তাহার কিছু কিছু পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। লক্ষ্মণশাসনসময়ে গৌড়ীয় হিন্দুসাম্রাজ্য যে স্বরক্ষিত ছিল, তাহাতে সন্দেহ নাই ; কিন্তু পশ্চিমাঞ্চল হইতে মিথিলার পথে কেহ আক্রমণ করিলে, তাচার গতিরোধের কোন উপায় ছিল না।