বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় তৃতীয় খণ্ড.djvu/৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

چهار \ দ্বিতীয় সংখ্যা । ] বিষ্ণুমাহাত্ম্য। * পৌরাণিক যুগের সময়ে জৈনেরা অনেক মাতৃকাকে পাৰ্ব্বতীর নামান্তর বা রূপাস্তর হিন্দুপুরাণকে জৈন করিয়া লইয়াছিল । বলিয়া মহেশ্বরের পত্নী করা হইয়াছিল । এটা শ্ৰীবৎসের আর একটি অর্থের কথাবলিতেছি । শ্ৰী অর্থে লক্ষ্মী এবং বৎস অর্থে প্রিয় ; এই স্বত্র ধরিয়াও বিষ্ণুকে শ্ৰীবৎস বলা হইয়াছে । এ অর্থটা যে শব্দের নানা অর্থের সাহায্যে নুতন কল্পনা, তাহ লক্ষ্মীদেবীর ইতিহাস আলোচনা করিয়া দেখাইতেছি। ঐ বা লক্ষ্মী প্রথমত অশরীরী সৌন্দর্য্য এবং সৌভাগ্যমাত্রই ছিলেন ; কেবলমাত্র কথার রূপকে দেবরাজ ইন্দ্র ত্ৰৈলোক্যঐ সভাগ করিতেছিলেন । ঐ কোন আস্ত দেবীর নাম ছিল না । পুরাণে দেখিতে পাই যে, ইন্দ্র দুৰ্ব্বাসার অভিশাপে ত্ৰৈলোক্যশ্ৰী হারাইয়াছিলেন ; এবং পরে সমুদ্রমন্থনের সময় যখন পুনরুখিত হইলেন, তখন একেবারে গিয়া বিষ্ণুর বক্ষশোভা হইয়া বসিলেন । এখানেও যেন রূপক চলিয়াছিল ; এবং সেইজন্যই প্রথমত লক্ষ্মীদেবীর প্রতিষ্ঠা বা পূজা দেখিতে পাই না । অগ্নিপুত্র স্কন্দদেবের ইতিহাসে মহাভারতের বনপর্বে উল্লিখিত আছে যে, স্কন্দপত্নী দেবসেনাই শ্ৰী । পঞ্চমী তিথিতে উ হার বিবাহ হইয়াছিল বলিয়া শুক্লপঞ্চমী স্ত্রপঞ্চমী নামে আখ্যাত হইয়া ঐ সময়ে স্ত্রীর পূজা হইত। এখন কিন্তু শ্রীপঞ্চমীতে সরস্বতীপুজা হয় । শ্ৰীঠাকুরাণীকে লইয়। বড়ই গোলে পড়া গেল। কতকগুলি ভীমরূপিণী মাতৃক স্কন্দের অনুচরা ছিলেন । .স্কন্দকে যখন মহাদেবের পুত্র বলিয়া নুতন পুরাণ হইল, তখন ‘মাতৃকা’কথাটার অভ্যরকম অর্থের মবিধায়, নুতন সম্পর্ক স্বষ্টি করিয়া, কতকগুলি তান্ত্ৰিকধৰ্ম্মপ্রবর্তনের পূৰ্ব্বে হয় নাই । শিশু স্কন্দকে মাতৃকাগণ রক্ষা করিয়াছিলেন বলিয়া, ষষ্ঠীনামী মাতৃকা নবজাত সস্তানের কল্যাণকামনায় পূজিত হইতেছিলেন। কাদম্বরী প্রভৃতি গ্রন্থেও ষষ্ঠীপূজার উল্লেখ দেখিতে পাই । এই সকল দেবীগণ এত পূজ্য এবং যথার্থ দেবী বলিয়া স্বীকৃত যে, কোন শাস্ত্রে বা সাহিত্যে শাপভ্রষ্টা করিয়াও ইহাদিগের নরসহবাস কল্পিত হয় নাই । কিন্তু লক্ষ্মীকে কথায় কথায় বীরপুরুষ এবং রাজাদিগের. পত্নীরূপে বর্ণিত হইতে দেখা যায়। অন্ত’ দেবী লইয়া এ প্রকার কল্পনা বা রূপকযোজনাও মহাপাপ । শাপভ্রষ্ট সরস্বতী নরসহবাসে বাণভট্টের পুর্বপুরুষের স্বজনকারিণী । কমলার সহিত ঋষিসহবাসের কথা কাদম্বরীতে কল্পিত আছে। এইজন্ত মনে হয় যে, রূপকের দেবীটি কোনরূপে বিষ্ণুঠাকুরের বক্ষে বসিয়া ঠাকুরের গৃহশূন্ততার অপবাদ মোচন করিয়াছেন । শ্ৰীবৎস প্রথমত বক্ষের চিহ্লবিশেষই ছিল, পরে শ্রীর প্রণয় হইতে ঐ কথাটার ব্যুৎপত্তি করা হইয়াছে। সূতন বিষ্ণু নুতন মহেশ্বরের মত নানা দেবতা ভাঙিয়া গঠিত । শিবের মত বিষ্ণুও অনেক অনাৰ্য্য দেবতাদিগকে অঙ্গীভূত করিয়ছিলেন। বিষ্ণুমাহাত্ম্য প্রতিষ্ঠিত হইবার পর, মহারাষ্ট্রদেশীয় বিঠল, তৈলঙ্গদেশীয় ভেঙ্কট প্রভৃতি অনাৰ্য্যদেবতা বিষ্ণু হইয়া উঠিয়ছিলেন । _ চঞ্চল লক্ষ্মীকে বিষ্ণুর বক্ষে অচলা করা হইয়াছে ; তবুও বিষ্ণুর সৌভাগ্য চিরস্থায়ী