পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ృe 8 ম্যাটুসিনি উঠিলেন, এবার শরীরের । পতন হইল না, মস্ত্রের সাধন হইল। আমাদের শাস্ত্রে আছে, হরিনাম করিলে পাপী পাপমুক্ত হয়। বলিতে কি, ইতালীর ম্যাটুসিনির এবং আনন্দমঠের সত্যানন্দের নাম উচ্চারণ করিলে, স্বার্থপরতাকলুষ প্রভৃতি হৃদয়ের মলমালিন্ত বিধৌত হইয়া, হৃদয় পবিত্র হয়। কেন না, এবংবিধ পবিত্র মহাপুরুষগণ ভগবানের অংশবিতার-র্তাহারা জাতিবিশেষের উদ্ধারের জন্ত, ধৰ্ম্মসংস্থাপনের জন্ত সময়-সময় অবতীর্ণ হন । ৪ । আনন্দমঠের চতুর্থ স্বত্র ধৰ্ম্ম । পবিত্র স্বদেশপ্রেম দীপশিখার দ্যায় স্বর্গের দিকে, ভগবানের দিকে উত্থিত হয় এবং ধৰ্ম্মরূপে পরিণত হয়। ধৰ্ম্ম আত্মবিসর্জনের অবিরামবাহী নিৰ্ব্বর, মানবচিস্তাসাগর-মথনপ্রস্থত অমৃত—যাহা পান করিয়া নরদেবগণ অমরত্ব লাভ করেন । স্বদেশপ্রেম স্বদেশীর সঙ্গে মানুষকে একীভূত করে । ধৰ্ম্ম ভগবানের সহিত মানুষকে সংযুক্ত করে। একদিকে স্বদেশের উদেশে সস্তানগণ যেমন “বলে মাতরং সুজলাং স্বফলtং মলয়জশীতলাং শস্ত খামলাং মাতরং” গাহিতেছেন, তেমনি অদ্যদিকে গাহিতেছেন - হয়ে মুরারে মঞ্চকৈটারে ঝুগল গোবিন্স মুকুশ সেরে। সত্যানন্দ ও সস্তানগণ স্বদেশকে ঈশ্বরের সহিত সমন্বিত করিয়াছিলেন। সন্তানগণ যুদ্ধের সময় ধল গান করিতেছেন,তখন স্মরণ হয় যে, ক্রমূঞ্জলেচালিত “পিউরিটানগণ” (puritan ) স্তোত্র গাহিতে গাহিতে যুদ্ধে প্রবেশ করিয়ী রাজার সেনাদলকে ছিন্নভিন্ন शथ्रश्चांब ।। [ ७छै बई, जांवांछ । করিতেছে । ধৰ্ম্ম ব্যতীত আমাদিগের দেশের কখন প্রকৃত উন্নতি হইবে না,—কখন অভু্যখান হইবে না, ইহাই অঁাননামঠের চতুর্থ মন্ত্র । বঙ্কিমবাবু আনন্দমঠে আর একটি কথা স্বদেশীকে বিশেষ করিয়া বুঝাইতে •চেষ্টা করিয়াছেন। যত্র মতি তত্র গতি। প্রথমে সত্যানন্দের ধনবল বা লোকবল কোন সম্বলই ছিল না। ছিল ভক্তি, ছিল স্বদেশপ্রেম। তাই সেই অসহায় ব্রহ্মচারী একক একটা মস্ত সেনাদল প্রস্তুত করিলেন, স্বদেশ-উদ্ধারে তাহাদিগকে নিযোজিত করিলেন, ইংরেজকে পরাজিত করিলেন । কিন্তু সেই জয়লাভে হিন্দুরাজত্ব স্থাপিত হইল না। ইহাতে বঙ্কিমবাবু আমাদিগকে কি শিক্ষা দিতেছেন ? বঙ্কিম আনন্দমঠে ও কবি হেম বৃত্রসংহারে বলিতেছেন—“ফলভোগ করিবার পূৰ্ব্বে বৃক্ষরোপণ কর –বীজবপন করিবার পূৰ্ব্বে ক্ষেত্র উপযুক্তরূপে কৰ্ষণ কর।” অদ্য দেশে জাতীয়ভাবের উচ্ছাস দেখা যাইতেছে ; কিন্তু ভাই সাবধান, ভাবের তরঙ্গে ধীর বিবেককে হারাইও না । ক্ষেত্রকর্ষণ করিবার মুখ্য সময় 1 আগত । ভগবানের কৃষাণগণ ! শান্তি সহ ক্ষেত্রকর্ষণ করুন—গম্ভীরভাবে, নীরবে । অধীর হইয়। আত্মঘাতী হইবেন না। “বন্দে মাতরং” রচয়িতার উপদেশ ভুলিবেন না— “সমাজবিপ্লব অনেকসময় আত্মপীড়ন মাত্র।” আনন্দমঠের শেষে বঙ্কিমবাবু চিকিৎসকের মুখ দিয়া যে কথা বলিয়াছেন, তাহ অবহিতচিত্তে প্রণিধান করুন । চিকিৎসক বলিলেন “সত্যানন্দ, কাতর হইও না।..তুমি বুদ্ধির ভ্রমক্রমে দ্যুবৃত্তির দ্বারা ধন সংগ্ৰহ করিয়া রণজয় করিয়াছ। -