পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/২০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দুর্ভিক্ষপীড়িত ভারতে مکتهای تجاریه જ গোলাপী রঙের সুন্দর পুরী । আরো দেড়ক্রোশ উত্তরাভিমুখে । উদয়পুরের পর চইতে—মকভূমির পর মরুভূমি । সমস্ত ভূমিই অভিশাপগ্ৰস্ত ;–মাটির উপরে, যেন একটা শাদা ভস্মের স্তর পড়িয়াছে ; সেন একটা আগ্নেয়গিরির ব্যাপক অগ্নাচ্ছাসে এই ভস্ম চারিদিকে বিকীর্ণ হইয়াছে। পুৰ্ব্বে দেখানে জঙ্গল ছিল, গ্রাম ছিল, কৃষিভূমি ছিল—এখন সমস্তই একাকার,-- একই বিধঃ রঙে রঞ্জিত । কিন্তু এই উদাস-উজাড় সরু প্রদেশে ও একটি সুরমা নগর, পূর্ণ প্রাচ্যমহিমাম বিরাজ করিতেছে । যে সকল বীথি, সমুচ্চ দস্তুর প্রাকারাবলী, ছুচাল-খিলান-সমন্বিত দ্বারসমূহ এইখানে আসিয়া মিলিত হইয়াছে, উহ শুভ্রপরিচ্ছদধারী অশ্বারোঙ্গী পুরুষে, পীত কিংবা লোহিত অবগুণ্ঠনে আবৃত রমণীবৃন্দে পরিপূর্ণ। গরুর গাড়ি যাতায়াত করিতেছে। মুসজ্জিত উটের সারিবন্দি হইয়া চলিয়াছে। ম-কালের মত, চারিদিকে বিচিত্র রঙের ছড়াছড়ি-জীবন-উদ্যমের উদ্দাম স্ফ প্তি । কিন্তু প্রাকারাবলীর পাদদেশে, ছেড়া ঠাকুড়ার বস্তার মত ও সব কি দেখা যায় ?— উহার মধ্যে কতকগুলা মনুষ্যের আকার প্রচ্ছন্ন রহিয়াছে।...জমির উপর ঐ লোকগুলা কে ? উহারা কি মাতাল ?—উহার কি গ’ল ?--আহা ! কতকগুলা শীর্ণকায় জীব, 6: কতকগুলা অস্থিপঞ্জর, কতকগুলা “মমি”শব !—কিন্তু না, এখনো যে নড়িতেছে ; চোখের পাতা পড়িতেছে ; • চোখ মেলিয়া চাহিতেছে! শুধু তাহী নহে, খাড়া হইয়া উঠিয়াছে। জঙ্ঘাকার লম্বা-লম্ব অস্থিখণ্ডের উপর ভর দিয়া টলমল করিতেছে।-- প্রথম দ্বারটি পার হইবার পরেই আর একটি দ্বার । এষ্ট দ্বারটি ভিতরকার প্রাচীরগাথনির মধ্য হইতে কাটিয়া বাহির-করা। দস্তুর চুড়াদেশ পৰ্য্যন্ত এই প্রাচীরটি গোলাপী রঙে রঞ্জিত ;--গোলাপী রঙের জমির উপর, ভারতীয় নকয়ার ধরণে, নিয়মিত অন্তরে শা শাদা ফুলের নক্স কাটা । পুরু ধূলার স্তরের উপর, এখনো কতকগুলা শু্যামবর্ণ মনুষ্যের গাদা রহিয়াছে ;--যেন ভস্মরাশির মধ্যে নিমজ্জিত । পুষ্পচিত্র-বিভূষিত এই সুন্দর গোলাপী রঙের প্রাচীরের সম্মুখে উহাদিগকে আরো কদাকার দেখাইতেছে। দেখিলে মনে হয়, যেন অস্থিপঞ্জরের উপর একখণ্ড শুকানো চামড়া লাগাইয়া দেওয়া হইয়াছে। হাড়গুলা যেন স্পষ্ট করিয়া গোণা যায়। হাটু ও কমুয়ের গাঠ যেন একএকট, মোট গোলা ;–লাঠির গাঠের মতু। উরতে শুধু একটি হাড়-নীচের জভঘা অপেক্ষ শীর্ণ ; জভঘাতেও দুইটি অস্থিখণ্ড ছাড়া আর কিছুই