বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

f ২৬ জরাত করিতেছেন,তাহাতে প্রজাস্থষ্টির সুন্দর ব্যবস্থা হইলেণ্ড সময়ে সময়ে, লোকস্থিতির ব্যাখাত ঘটতেছে। অন্য ডিপার্টমেন্টের দপ্তর দক্ষিণদিকৃপাল ধৰ্ম্মরাজের অধীন ; পুষ্পবাণে বিদ্ধ হইয়া সমাজতন্ত্রের অবাধ্যতা করিয়া যাহার লোকস্থিতিরব্যাঘাত জন্মাইতেছে, দপ্তর চিত্রগুপ্ত তাহাদের নাম র্যাকবুকে টুকিয়া লইতেছেন। তুইট ডিপার্টমেণ্টে এইরূপ বিরোধের সৃষ্টি nকরিয়া প্রজাপতি কতটা স্থায়ব্যবস্থা দেখাইয়াছেন, তাহ জানি না; কিন্তু মনুষ্য যে তাহাব ফলে কৃপাপাত্র হইয়াছে/ তাহাতে সন্দেহ করি মা ! ধৰ্ম্মশাস্ত্র ও নীতিশাস্ত্র যতই ভূকুটিভঙ্গী করিয়া পথভ্রষ্ট মনুষকে তিরস্কার করুন, মনুষ্য বস্তুতই কৃপার পাত্র। বঙ্কিমচন্দ্র সেই কৃপাপাত্র মন্থয্যের শোচনীয় অবস্থা তাহার চারিখানি উপন্যাসে সুন্দর করিয়া আঁকিয় দেখাইয়াছেন ;–প্ৰতাপ ও নগেন্দ্রনাথ, অমরনাথ ও গোবিন্দলাল, সকলেই সেই কুসুমসাকের লক্ষ্য হইয়াছিলেন ; ধৰ্ম্মবুদ্ধির দৃঢ়ত ও প্রবৃত্তির তীব্রতার তারতম্যানুসারে কেহ বা জয়লাভ করিয়াছিলেন, কেহ বা পারেন নাই। চিত্রগুপ্তের খাতায় সকলেরই কিন্তু নাম উঠিয়াছিল। বীর্য্যবস্ত প্রতাপ সারাজীবন প্রবৃত্তির সহিত যুদ্ধ করিয়া সম্পূর্ণ জয়লাভ করিয়ছিলেন, মৃত্যুর পূর্কে তাহার অতি সংক্ষিপ্ত উক্তিতে র্তাহার জীবনব্যাপী কঠোর ও নীরব সাধনার বিষয় জগতের লোকে জানিতে পারিয়াছিল। মোহমুগ্ধ অমরনাথ আপনার পিঠের উপর আকস্মিক পদস্খলনের স্থায়ী চিন্তু ধারণ করিয়া তাহার স্বাভাবিক দম্ভের বলে পল লন সন্ন্যাসী সাজিয়া বেড়াইয়া • बछझध्वनि । ৬ষ্ঠ ৰং বৈশাখ i ছিলেন ; পত্নীবৎসল নগেন্দ্রনাথ আপনার আত্মাকে ছিন্ন-ভিন্ন-বিনীর্ণিৈরয়া,অনাথ পিতৃহীন বালিকার প্রতি দয়প্রকাশের ফলভোগ করিয়াছিলেন ; আর সর্বাপেক্ষ কৃপাপাত্র গোবিন্দলাল সৰ্ব্বতোভাবে আপনার অনধীন ঘটনাচক্রের • নিষ্ঠুর পেষণে নিস্পিষ্ট হইয়া আপনাকে কলঙ্কহূদে নিমগ্ন করিয়া অবশেষে অপমৃত্যুদ্বারা শান্তিলাভে বাধ্য হইয়াছিলেন। এই চারিটি মনুষ্যের বিভিন্ন দশার চিত্র সম্মুখে রাখিরা আমরা কখনও মানবচরিত্রের মহিমা দেখিয়া স্পৰ্দ্ধিত ও গৰ্ব্বিত হইতে পারি, কখনও বা জাগতিক শক্তির সম্মুখে মানবের দৌৰ্ব্বল্য দেখিয়া ভীত হইতে পারি। বঙ্কিমচন্দ্র মানবজীবনের ও জগদ্বিধানের এই সমস্তা— এই গোড়ার কথা—অতি স্বন্দর চিত্রে চিত্রিত করিয়াছেন এবং এইজন্ত তিনি উচ্চশ্রেণীর কবি । আজিকার • দিনে বঙ্কিমচন্দ্রের অদৃশুহস্ত আমাদের জাতীয়জীবনকে যেরূপে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত করিতেছে, তাহাতে ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র যতই উচ্চস্থানে অবস্থান করুন, ,বঙ্কিমচন্ত্রের অন্ত মূৰ্ত্তির পদপ্রান্তে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করিতে আজ ব্যগ্র হইব, ইহা স্বাভাবিক। বঙ্কিমচন্দ্র কতদিক্ হইতে আমাদের জীবনের উপর প্রভুত্ব করিতেছেন, তাহার গণনা দুষ্কর। ইংরেজিতে একটা বাক্য চলিত হইয়াছে, যাহার মূলে গ্রীকৃ নাই, সে জিনিষ জগতে অচল। বলা বাহুল্য, পাশ্চাত্য জাতির জগৎ অর্থে কেবল পাশ্চাজ্ঞদেশ বুঝায়। আমরা যদি ঐ বাক্যকে ঈষৎ পরিবর্তিত করিয়া বলি যে, যাহার মূলে বঙ্কিমচন্দ্র নাই, সে জিনিষ বাঙলাদেশে