পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৪৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নবম সংখ্যা । ] শান্তং শিবমদ্বৈতম্ । । 8२é প্রত্যেক পদার্থকে পরস্পরের সহিত অবিচ্ছেদ্য •সম্বন্ধবন্ধনে বাধিয়া তুলিতেছে। পৃথিবীর ধূলিকণাটুকুও লক্ষযোজনদুরবর্তী স্বৰ্য্যচন্দ্রগ্ৰহতারার সঙ্গে নাড়ির যোগে যুক্ত। কেহ কাহারে পক্ষে অনাবগুক নহে। এক বিপুল পরিবার, এক বিরাট্‌ কলেবর রূপে নিখিল বিশ্ব তাহার প্রত্যেক অংশ-প্রতাংশ, তাহার প্রত্যেক অণুপরমাণুর মধ্য দিয়া একই রক্ষণস্থত্রে, একই পালনস্থত্রে গ্রথিত । সেই রক্ষণী শক্তি, সেই পালনী শক্তি নানা মুষ্টি ধরিয়া জগর্তে সঞ্চরণ করিতেছে ; মৃত্যু তাহার একু রূপ, ক্ষতি তাহার এক রূপ, দুঃখ তাহার এক রূপ ; সেই মৃত্যু, ক্ষতি ও দুঃখের মধ্য দিয়াও নবতর প্রকাশের লীলা আনন্দে অভিব্যক্ত হইয়া উঠতেছে। জন্মমৃত্যু, সুখদুঃখ, লাভক্ষতি, সকলেরই মধ্যেই “শিব"শাস্তুরূপে বিরাজমান। নহিলে এ সকল ভার এক মুহূৰ্ত্ত বহন করিত কে নহিলে আজ বাহা সম্বন্ধবন্ধনরূপে আমাদের পরম্পরকে আকর্ষণ করিয়া রাখিয়াছে, তাহ যে আঘাত করিয়া আমাদিগকে চূৰ্ণ করিয়া ফেলিত ! যাহা আলিঙ্গন, তাহাই যে পীড়ন হইয়া উঠিত। আজ স্বৰ্য্য আমার মঙ্গল করিতেছে, গ্রহীতারা আমার 'भत्रल করিতেছে, জল স্থল-আকাশ আমার মঙ্গল করিতেছে, যে বিশ্বের একটি বালুকণাকেও আমি সম্পূর্ণ জানিন, তাহারই বিরাট প্রাঙ্গণে আমি ঘরের ছেলের মত নিশ্চিন্তমনে খেল করিতেছি ; আমিও যেমন সকলের, সকলেও তেমুনি আমার—ইহা কেমন করিয়া ঘটিল ? যিনি এই প্রশ্নের একটিমাত্র উত্তর, তিনি নিখিলের সকল আকর্ষণ, সকল সম্বন্ধ, সকল কর্মের মধ্যে নিগুঢ় হইয়া, নিস্তব্ধ হইয়া সকলকে রক্ষা করিতেছেন। তিনি শিবম্। এই শিবস্বরূপকে সত্যভাবে উপলব্ধি করিতে হইলে আমাদিগকেও সমস্ত অশিব পরিহার করিয়া শিব হইতে হইবে। অর্থাৎ শুভকৰ্ম্মে প্রবৃত্ত হইতে হইবে। • যেমন শক্তিহীনতার মধ্যে শান্তি নাই, তেমনি কৰ্ম্মহীনতার মধ্যে মঙ্গলকে কেহ পাইতে পারে •ন । ঔদাসীন্তে মঙ্গল নাই। কৰ্ম্মসমুদ্র মন্থন করিয়াই মঙ্গলের অমৃত লাভ করা যায়। ভালমদের দ্বুদ্ধ, দেবদৈত্যের সংঘাতের ভিতর দিয়া দুর্গম সংসারপথের দুরূহ বাধাসকল কাটাইয়া তবে সেই মঙ্গলনিকেতনের দ্বারে গিয়া পৌছিতে পারি—শুভকৰ্ম্মসাধনদ্বারা সমস্ত ক্ষতিবিপদ ক্ষোভবিক্ষোভের উদ্ধে নিজের অপরাজিত হৃদয়ের মধ্যে মঙ্গলকে যখন ধারণ করিব, তখনি জগতের সকল কৰ্ম্মের, সকল উত্থানপতনের মধ্যে সুস্পষ্ট দেখিতে পাইব, তিনি রহিয়াছেন, যিনি শাস্ত, যিনি শিবম্। তখন ঘোরতর , দুলক্ষণ দেখিয়াও ভয় পাইব না ; , নৈরাষ্ঠের স্বনান্ধকারে আমাদের সমস্ত শক্তিকে যেখানে পরাস্ত দেখিব, সেখানেও জানিব, তিনি রাথিয়াছেন, যিনি শিবম্। - তিনি অদ্বৈতম্। তিনি অদ্বিতীয়, তিনি এক | ф е ংসারের সব-কিছুকে পৃথক্ করিয়া, বিচিত্র করিয়া গণনা কফুিত গেলে বুদ্ধি অভিভূত হইয় পড়ে, আমাদিগকে হার মানিতে হয়। তবু ত সংখ্যার অতীত এই বৈচিহ্যের মহাসমুদ্রের মধ্যে আমরা পাগল হইয়া যাই নাই, আমরা ত চিন্তা করিত্বে