বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

64 e করিলেন। আমি "স্বরুচির কুটীরে”র কথা তুলিলাম, তিনি তাহার প্রশংসা করিয়া বলিলেন, লাইব্রেরিতে খুজিয়া দেখিয়াছেন, ভাল ভাল অনেক বই নাই। বাহিরে কুমারমহাশয়ের কাছে অনেক পুস্তক চলিয়া গিয়াছিল, আমি আনিয়া দিতে চাহিলাম। মা প্রথমে সন্মত হইলেন, কিন্তু যেন একটু কুষ্টিভভাবে, তার পর আবার বল্লিলেন, “না, কাজ নাই।” আমি জানিতাম, পাঠাগারের সবত্বসংগৃহীত এবং বাধান বইগুলি তার শোণিততুল্য প্রিয়। কিন্তু এখন সকলই ত্যাগ করিয়া তীর্থবাসে যাইতে প্রস্তুত হইতেছিলেন । যে ঠাকুরাণীটির কথা কয়বার বলিয়াছি, তিনি অনেকসময়ে মহারাণীমাতার কাছে খসিয়া থাকিতেন। একদিন একটি স্ত্রীলোক মার কাছে কি প্রার্থনা করিতে আসিয়া অষ্ঠের . কথা জানাইতেছিল । শুনিয়া ঠাকুরাণী বলিতেছিলেন, নিজের কথা থাকে ত কৰ্ত্তাকে বল, অস্তের কথা বলিয়া কেবল উহাকে মিছামিছি বিরক্ত করা হয়। মা হাসিলেন, বলিলেন, “কোকন বলে, নিজের দেন আগে শোধ দেন। সত্য কথা ! চুপ করিয়া থাকি।” • একদিন কিছু বেলা হইলে রাজন্তঃপুরে গিয়া দেখি, তিনি কিছু চিন্তাযুক্ত। কোন সরিকের পোষ্যপুঞ্জের অঞ্জ যাগ। নিমন্ত্রণ হইয়াছে, যাওয়া উচিত কি ন, মা তাহারই “পরামর্শ ও মীমাংসার ব্যস্ত। বলিলেন, “অন্থান্ত তরফের বলেন যে, উইল প্রকৃত मारु। সুতরাং দত্তকপুত্র নহে, পালিত । তাহাতাহার সহিত একাসনে বসিবেন না। বঙ্গদর্শন । [ ৬ষ্ঠ বর্ষ, ফাঙ্কন"।

  • * রাণী কাল নিজে আসিয়াছিলেন, তাহারও ইচ্ছ যে, যাওয়া না হয়। বরং যাগের পর অপরাহ্লে গেলেই হইবে।” শেষে সিদ্ধাস্ত হইল, যখন উহা লইয়া কথা উঠিয়াছে, তখন যাওয়াই কৰ্ত্তব্য । মহারাণী বলিতে লাগিলেন, “প্রথমে যে উইল হয়, নাবালকী

অবস্থার বলিয়া সন্দেহবশত তাহ বাহির করা হইতেছে না। শুনিতেছি, শেষের উইলও রেজেষ্টারি করা হয় নাই। পাচশ টাকা জরিমান দিলে রেজেষ্টারি হইবে। এরূপ অবস্থায় দত্তকপুত্র টিকিবে বোধ হয় না, একটা সাক্ষীতে হয় ত পড়িতে হইবে।” আমার প্রশ্নমতে বলিলেন যে, “শেয উইলখানি অন্তের স্বার্থে পূর্ণ, অনেকগুলি টাকা তদনুসারে মাসহারা দিতে হয় । কস্তার প্রাপ্য মাসিক কেবল দশটি টাকা ।” আমি কহিলাম, “দেখুন, কত ভুল। নিজের সন্তান থাকিতে অন্তকে আনা কেন ? পোষ্যপুত্র প্রায় ভাল হয় না। বঙ্কিমবাবুর সঙ্গে আমার একদিন সে কথা হইয়াছিল, তিনিও তাই বলিয়াছিলেন। লোকে নাম রাখিবার জন্ত এ সব করে, সৎকীৰ্ত্তির দ্বার নাম রাখিলেই ত হয়। সেই টাকায় একটা স্থায়ী কাজ কিছু হইতে পারে। নহিলে নিজের সস্তন দিয়া অনেকের মুখ অন্ধকার হয়, পরের ছেলে ত দূরের কথা।” মহারাণী স্মিতমুখে বলিলেন, “সত্য কথা।” কিন্তু তখনই আবার গম্ভীর হইলেন। উইলের কুথ চলিতে লাগিল। কেহ বলিলঃ “অন্তিমকালে যে সব উইল লিখিত হয়; তাহাতে লেখকের স্বার্থসিদ্ধি করিয়া লয়। কিন্তু আমাদের রাজবাড়ীর উইলে তেমন কিছু হইতে পায় নাই।” মাত কহিলেন,