বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৫৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰাদর্শ সংখ্যা। ] এখন পর্য্যন্ত আমাদের প্রাদেশিক-সমিতি কেবলমাত্র মুষ্টিপ্রমাণ শিক্ষিতলোকেরই প্রতিনিধি হইয়া কাৰ্য্য করিতেছে। দেশের জনসাধারণ ইহার সঙ্গে এখনো কোনোপ্রকারেই সংযুক্ত ও সম্মিলিত হয় নাই। গতবৎসর মৈমনসিংএ স্বল্পপরিমাণে জেলার সাধারণ লোকে ইহার কথা শুনিয়াছিল এবং কেহ কেহ সভাদিতেও আসিয়া যোগদান করিয়াছিল সত্য, কিন্তু তাহারাও স্থায়িভাবে, কনফারেস্ট্রের অঙ্গীভূত • হইয়া যায় নাই। দেশের লোককে স্থায়িভাবে কংগ্রেস বা কনফারেন্সের অঙ্গীভূত করিবার কোনো বন্দোবস্তও আজ পর্য্যস্ত হয় নাই। নেতৃদের মধ্যে দশ-পোনের জন বহুকালাবধিই এসকলের সঙ্গে সংযুক্ত হইয়া আছেন সত্য ; কিন্তু অধিকাংশ সভ্য ও শ্রোতাই নদীজলের মত জোয়ারে আসেন, ভাটায় নমিয়া যান,-- পঞ্জিকায় জোয়ারভাটার তালিকার মত ইহাদের নাম উপস্থিত সভ্যদিগের তালিকায় প্রতিষ্ঠিত হয়, কিন্তু তাহাদের কার্যের চিন্তু কোথাও থাকে না । 蠍 আর এরূপভাবে এ সকল কাজ করিলে চলিবে না। প্রাদেশিক-সমিতিকে একটা স্থায়ী আকার প্রদান করিতে হইবে ; তাহাতে বিবিধ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের প্রতিষ্ঠা করিয়া তাহাকে নিয়ত কৰ্ম্মশীল কুরিয়া তুলিতে হইবে, এবং এই সকল নিত্যকৰ্ম্মের যোগে জনমণ্ডলীর ভাব, চিন্তা, আদর্শ, আকাঙ্ক্ষা ও দৈনন্দিন ঝুঁকিৰে সঙ্গে তাহাকে বিস্তৃত ও জটিল ও অচ্ছেদ্যরূপে সংযুক্ত করিতে হইবে। এতদৰ্থে সৰ্ব্বপ্রথমেই প্রাদেশিক-সমিতির *একটা স্থায়ী সভ্যদল গঠন করিতে হইবে। বাঙালীমাত্রেই জাতি, বর্ণ ও ধৰ্ম্ম নিৰ্ব্বিশেষে, প্রাদেশিক-সমিতি। ébré অষ্টাদশবর্ষ বয়ঃক্রম অতিক্রম করিলেই, যৎসামান্ত বার্ষিক বা ত্রৈবার্ষিক প্রণামীদানে, এই সমিতির সভ্যশ্রেণীভুক্ত হইতে পারিবেন। এই প্রণামীর হার যত অল্প হয়, ততই ভাল ; —দুই-আনা, এমন কি, এখন এক-আনা করিলেও ক্ষতি নাই। সমিতির উদ্দেশু "প্রচার করিয়া, গ্রামে গ্রামে ও নগরে নগরে বক্তা, উপদেষ্ট ও প্রচারক প্রেরণ করিয়া, এই সভ্যদল গঠন করিতে হইবে। • কোনো গ্রামে পঞ্চাশজন সভ্য হইলেই তাহদের দ্বারা গ্ৰাম্যসমিতি গঠন করিতে হইবে। গ্রামের মধ্যে স্বদেশীভাবের প্রতিষ্ঠা করা, স্বদেশীদ্রব্যের প্রচলন করা, স্বদেশী-আন্দোলন জাগ্রত করা ও জাগাইয়া রাখা ;—গ্রামের মুখস্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করা, গ্রাম্য পথঘাটু পরিষ্কার রাখা, জলকঃনিবারণের জন্ত প্রয়োজনমত বাপীতড়াগাদি খনন করা, গ্ৰাম্য বালকদিগের সংশিক্ষার সাহায্য কর, গ্রামের যুবকদিগের মধ্যে ব্যায়ামাদির বন্দোবস্ত করা, গৃহস্থের , যাহাতে আপন-আপন দেওয়ানী বা ছোট ছোট ফৌজদারী মামলা-মোকদ্দমা আপনার সালিশ নিযুক্ত করিয়া মিটাইতে পারে, তাহার চেষ্টা দেখা,–এই সকলই গ্ৰাম্যসমিতির কার্য্য হইবে। গ্রাম্যসমিতি ঐতদৰ্থে অর্থসংগ্ৰহ করিবে, কৰ্ম্মকর্তা নিযুক্ত করিবে, এবং যতটা সম্ভব, গ্রামের সর্ববিধ শাসনসংরক্ষণের.ভার আপনাদের হস্তে গ্ৰহণ করবে। এ কার্য্যে" ইংরেজের সঙ্গে বা তাহার শাসনযন্ত্রের সঙ্গে কোনো বিরোধ উৎপন্ন হইবার কোনোই আঁশঙ্কা নাই। ইংরেজ যাহ, করে, তাহাতে আমাদের হাত দেওয়া নিগ্রয়োজন। কিন্তু ইংরেজ তো অনেক কাজ করে