বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৬০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧tામ ગtષjા । ] তুমি যেমনভাবে শাস্ত্রকে বলাইবে, শাস্ত্রও ঠিক তেমনি বলিবে । শাস্ত্র তোমার প্রতিভার অধীন। বিশেষত সকল শাস্ত্রের প্রামাণ্য অঙ্গীকার করাও নিম্প্রয়োজন। আগে জগৎসম্বন্ধে একটা মত দাড় করাইয়া, পরে উহাকে শাস্ত্রীয়মত বলিয়া চালান – এই হইল বেদান্তের প্রস্থানভেদের মুল । এইরূপে অদ্বৈত, বিশিষ্টাদ্বৈত, দ্বৈত প্রভৃতি নানাপ্রকার বেদান্তব্যাখ্যার স্বষ্টি হইয়াছে । এই প্রস্থানভেদই দার্শনিকদিগের স্বাধীনচিন্তার প্রকৃষ্ট প্রমাণ। তবে এই স্বাধীনচিন্তা সম্পূর্ণ স্বাধীন হইল না, লোকসংগ্রহের জন্য অন্তত মুখে বেদের প্রামাণ্য স্বীকৃত হইল, ইহাই আমাদের ক্ষোভের বিষয় । পূৰ্ব্বে যাহা উক্ত হইন্মছে, তাহাতে মনে হইতে পারে যে, জৈমিনির “চোদনালক্ষণোহৰ্থে ধৰ্ম্মঃ"এই স্বত্রটিই যত জনর্থের মূল। কিন্তু একটি স্বত্র অথবা একজন দার্শনিকের বা ধৰ্ম্মপ্রচারকের মতে সমাজের কিছু আসে-যায় না । সমাজ যদি পূৰ্ব্ব হইতে ঐ মতের দিকে একটু ঝুঁকিয় না থাকে, তবে ঐ নূতন মতগুলি উষরভূমিতে পতিত বীজের ছায় শুকাইয়া যায়। সমাজে যাহা নিঃশব্দে চলিতেছিল, জৈমিনি তাহারই সম্যক্ কুভিব্যক্তি করিয়াছেন মাত্র । জৈমিনির “চোদনীলক্ষণোহর্থে ধৰ্ম্মঃ” এই সূত্রটি যেমন আমাদিগকে চিরকালের জন্য, গৰ্ভদাস করিয়া রাথিয়াছে, তেমনি তাহারই অার একটি সিদ্ধান্তে আমাদিগকে প্রদর্শিত প্রস্থানভেদের মূীভূত স্বাধীনতাটুকু দান করিয়াছে। এই প্ৰসিদ্ধাস্তটি অর্থবাদাধিকরণে ব্যাখ্যাত হইয়াছে। ,বেদে বস্তুতত্ত্বজ্ঞাপক এরূপ অনেক কথা আছে, বাহ প্রত্যক্ষাপ্রিমাণবিরুদ্ধ। যাহা প্রমাণ ধৰ্ম্ম, সমাজ ও স্বাধীনচিস্ত। 3. ψω 5 স্বারা মিথ্যা বলিয়া ঠিক হয়, শত শ্রীতিও তাহাকে সত্য বলিয়া প্রমাণ করিতে পারে না । “ন হাগমাঃ শতমপি ঘটং পটয়িতুমীশতে", “বাধিতমৰ্থং শ্রীতিরপি ন বোধয়তি ।” , বাধিত অর্থ কি, তাহ যুক্তিবলে, প্রত্যক্ষ ও অনুমানের দ্বারা, ঠিক্‌ করিতে হইবে। পরে ঐ সকল ,বাধিত অর্থের প্রতিপাদক শ্রীতিগুলির অন্তরূপ অর্থ করিতে হইবে। তাহ না করিলে ঐ সকল শ্রুতির প্রামাণ্য লোপ পায়, এবং উহাদের প্রামাণ্য না থাকিলে অপরাপর, শ্রুতির প্রামাণ্যেও লোকের আস্থা থাকে না । তাই প্রথমে যুক্তিতৰ্কদ্বারা কি সত্য, কি মিথ্যা, তাহ ঠিক করিবে । পরে যে যে অংশ ঐ-নিৰ্দ্ধারিত সত্যের বিরোধী, তাহাদিগকে একেবারে উড়াইয়া না দিয়া, তাহাদের অন্তরূপ অর্থ করিবে। এই হইল অর্থবাদাধিকরণের মূলতত্ত্ব। বেদে লিথিত আছে, “বনস্পতয়ঃ সত্ৰমাসত”— বৃক্ষের যজ্ঞ করিয়াছিল। এটি ভুল কথা । বৃক্ষের কিরূপে যজ্ঞ করিবে ? তাই ইহার অন্তরূপ অর্থ করিতে হইবে। অন্ধ টচেতনবৃক্ষে 'রাও যজ্ঞ করিয়াছিল, তবে চেতনশ্রেষ্ঠ মানুষ যজ্ঞ করিবে না কেন ? এইরূপ প্ররোচনাই এই শ্রুতির অর্থ। এইরূপ অর্থবাদসিদ্ধাত্ত অবলম্বন করিয়া আমরা ব্লল্লিতে পারি যে, পৃথিবী আচল বলিয়া যে শাস্ত্রে লিখিত আছে, তাহা অর্থবাদমাত্র। এই অর্থবাদলেই বেদান্তের নানা বাঞ্চ। এই অর্থবাসিন্ধান্তের সাহায্যে এখনও বেদের প্রামাণ্য কথঞ্চিৎ রক্ষিত হইতে পারে। যদি যুক্তিত্বারা মির্ণীত হয় যে, জগৎ ব্রহ্মের বিবৰ্ত্ত ভিন্ন আঁর কিছুই হইতে পারে না, তবে জগতের বিরুতিবোধক শ্রুতিকে অর্থবাদ বলিব না কেন ? •