পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় ষষ্ঠ খণ্ড.djvu/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

bos • তিন প্রকারে সাহিত্যের পরিপুষ্ট ঘটে— অম্বুবাদ, অমুকরণ ও মৌলিকতা। সাধারণত ভাষার ও সাহিত্যের হীনাবস্থায় অনুবাদ ও অনুকরণের বিশেষ প্রয়োজন। আমি একপ্রকার আশৈশব ইংরেজিসাহিত্য চর্চা করিয়াছি এবং গত্ব পনরবৎসর ধরিয়া ইংরেজিসাহিত্যের অধ্যাপনা করিতেছি । সুতরাং ইংরেজিসাহিত্যের ইতিহাস হইতে কি শিক্ষা পাওয়া যায়, তাহাই আপনাদের সমক্ষে বলিব। আপনাদের বোধ হয় অবিদিত নাই যে,প্রাচীনকালে ইংলণ্ডের বিখ্যাত রাজা অ্যালফ্রেড় (Alfred the Great) ostićasts হইতে কয়েকখানি গ্রন্থ অমুবাদ করেন। ইংরেজিভাষার হীনাবস্থায় আদিকবিগণ ফরাসী ও ইতালীয় ভাষা হইতে কাব্যাদির অনুবাদ বা অল্পর্করণ করিয়া বর্তমান বিরাটুসাহিত্যের ভিত্তিস্থাপন করিয়াছেন। কুইন এলিজাবেথের ও কুইন অ্যানের রাজত্বসময়েও অনেক উৎকৃষ্ট উৎকৃষ্ট ল্যাটিন ও গ্রীক গ্রন্থের ইংরেজিভাষায় মুম্বুবাদ-হইয়াছে। এইরূপে জৰ্ম্মানূসাহিত্যেক্ষ আধুনিক গৌরবের স্বত্রপাতকালে অনেক ইংরেজি ও ফরাসী নাটক ও কাব্য ঐ ভাষায় ভাষাস্তরিত হইয়াছিল। আমাদের দেশে ইংরেজিপ্রভাবের পূৰ্ব্বে যে সাহিত্য ছিল, সে সাহিত্যেও দেখিতে পাই, সংস্কৃতসাহিত্যের উৎকৃষ্ট গ্রন্থগুলির অম্বুবাদ বা অনুকরণ বছলপরিমাণে রহিয়াছে। দৃষ্টান্তস্বরূপ কৃত্তিবাসী রামায়ণ ও কাশীরামলাসের মহাভারতের উল্লেখ করিতে পারি। কবিকঙ্কণ চণ্ডী ও ঘনরামপ্রপাত উীধৰ্ম্মমঙ্গল প্রভৃতি গ্রন্থও আমার বিবেচনা পুরাণগুলির আদর্শে রচিত, দিওঁ সেগুলি কোন গ্রন্থবিশেষের জয়ৰা tvá w, tarkt নহে । তাহার পর, ইংরেজ-আগমনের পরে যে আধুনিক বাংলাসাহিত্যের আবির্ভাৰ হইয়াছে, তাহারও ইতিহাস পৰ্য্যালোচনা করিতে গেলে দেখা যায় যে, আধুনিক বাঞ্জলসাহিত্যের জন্মদাতা বিদ্যাসাগরমহাশয় ও তাহার সম্প্রদায় অনেক ইংরেজি ও সংস্কৃতগ্রন্থ মাতৃভাষায় অনুবাদ করিয়া নবীনসাহিত্যের সুচনা করেন। ইহাতে অল্পকালেই ভাষা ও সাহিত্যের পুষ্টি হইয়াছে । কিন্তু ভাষার হীনাবস্থাতেই যে অমুবাদ ও অনুকরণের প্রয়োজন থাকে, উন্নত অবস্থায় থাকে না, ইহা বিবেচনা করা ভুল। যদিও এখন ইংরেজি, জৰ্ম্মান, ফরাসী প্রভৃতি ভাষার সাহিত্য উন্নতির উচ্চসোপানে উঠিয়াছে, তথাপি এখনও পর্য্যন্ত প্রাচীন গ্ৰীকৃ ও ল্যাটিন ভাষা হইতে উৎকৃষ্ট গ্রন্থের অম্বুবাদের চেষ্টা সমভাবে চলিতেছে। তদ্ভিন্ন যখনই কোন ভাষায় একখানিউৎকৃষ্ট পুস্তক নবপ্রকাশিত হয়, তাহার তৎক্ষণাৎ যুরোপীয় অপরাপর ভাষায় অমুবাদের বন্দোবস্ত হয়। এইরূপে সভ্যজগতের সকল জাতিই স্বস্ব সাহিত্যের পরিপুষ্টিসাধনে যত্নশীল। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আজকাল আমাদের ভাষার লেখকের মৌলিকশক্তির প্রভাবে নানারূপ গ্রন্থ রচনা করিতে সমর্থ হইতেছেন বলিয়া অনুবাদের দিকে আর তত ধোক দেখা যায় না। ঐযুক্ত নবীনচন্দ্র দাস রঘুবংশের উৎকৃষ্ট পদ্ধান্থবাদ করিয়াছেন এবং প্রসিদ্ধ সাহিত্যসেৰী শ্ৰীযুক্ত জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেকগুলি সংস্কৃত ও বৈদেশিক নাটকের সুপাঠ্য অনুবাদ করিয়াছেন। ইং.ছাড়া আর বড় উল্লেখযোগ্য অম্বুবাদ দেখিতে পাই না। অতএৰ ৰা৷ ”