পাতা:বঙ্গদর্শন নবপর্যায় সপ্তম খণ্ড.djvu/৫৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

একাদশ সংখ্যা । ] দুঃখ । ૮૭૧ ফাইতেছে সেই ফসলে তাহার তপস্ত যতবড়, তাহার আননাও ততখানি। সম্রাটের সাম্রাজ্যরচনা বৃহৎ দুঃখ এবং বৃহৎ আনন্দ, দেশভক্তের দেশকে প্রাণ দিয়া গড়িয়া তোলা পরম দুঃখ এবং পরম আনন্দ—জ্ঞানীর ਾਂ রাভ, এবং প্রেমিকের প্রিয় সাধনাও তাই। খৃষ্টান শাস্ত্রে বলে ঈশ্বর মানবগৃহে জন্মগ্রহণ করিয়া বেদনার ভার বহন ও দুঃখের কণ্টক কিরীট মাথায় পরিয়াছিলেন। মানুষের সকল প্রকার পরিত্রাণের একমাত্র মূল্যই সেই দুঃখ। মানুষের নিতান্ত আপন সামগ্ৰী ৰে দুঃখ, প্রেমের দ্বারা তাহাকে ঈশ্বরও আপন কয়িয় এই দুঃখসঙ্গমে মানুষের সঙ্গে মিলিয়াছেন—দুঃপকে অপরিসীম মুক্তিতে ও আনন্দে উৰ্ত্তীর্ণ করিয়া দিয়াছেন—ইহাই খৃষ্টানধৰ্ম্মের মৰ্ম্ম কথা । 纖 আমাদের দেশেও কোনো সম্প্রদায়ের সাধকের ঈশ্বরকে দুঃপদারুণ ভীষণ মূৰ্ত্তির মধ্যেই মা বলিয়া ডাকিয়াছেন। সে মূৰ্ত্তিকে বাহতঃ কোথাও তাহারা মধুর ও কোমল, শোভন ও সুখকর করিবার লেশমাত্র চেষ্টা করেন নাই। সঙ্গর রূপকেই উহাৱা জননী বলিয়া অনুভব করিতেছেন। এই সংহারের বিভীষিকার মধ্যেই তাহারা শক্তি ও শিবের সম্মিলন প্রত্যক্ষ করিবার সাধনা করেন। শক্তিতে ও ভক্তিতে যাহারা দুৰ্ব্বল, তাহারাই কেবল মুখস্বাচ্ছন্দ্য শোভাসম্পদেব মধ্যেই ঈশ্বরের আবির্ভাবকে সত্য বলিয়া অনুভব করিতে চায়। তাহারা বলে ধনমানই ঈশ্বরের প্রসাদ, সৌন্দর্য্যই ঈশ্বরের মূৰ্ত্তি, সংসারমুখের সফলতাই ঈশ্বরের সুশীিৰ্ব্বাদ এবং তাহাই পুণ্যের পুরস্কার। ঈশ্বরের দয়াকে তাহারা বড়ই সকরুণ, বড়ই কোমলকান্ত রূপেদেখে। সেই জন্তই এই সকল ছৰ্ব্বলচিত্ত , মুখের পূজারিগণ ঈশ্বরের দয়াকে নিজের লোভের, মোহের ও ভীরুতার সহায় বলিয়া ক্ষুদ্র ও খণ্ডিত করিয়া জানে। কিন্তু হে ভীষণ; তোমার দয়াকে তোমার আনন্দকে কোথায় সীমাবদ্ধ করিব ? কেবল মুখে, কেবল সম্পদে, কেবল জীবনে, কেবলুনিরাপদ নিরাতঙ্কতায় ? দুঃখ, বিপদ, মৃত্যু ও ভয়কে তোমা হইতে পৃথক করিয়া তোমার বিরুদ্ধে দাড় করাইয়া জানিতে হইবে? তাহ নহে। হে পিতা তুমিই দুঃখ, তুমিই বিপদ, হে মাত, তুমিই মৃত্যু তুমিই ভয়। তুমিই ভয়ানাং ভয়ং ভীষণং ভীষণানাং । তুমিই লেলিহ্যসে গ্রসমান: সমস্তাৎ লোকান সমগ্রীন বদনৈৰ্জ লভিঃ তেজোভিরাপুর্ঘ্য জগৎ সমগ্ৰং ভাসন্তবোগ্ৰt: প্রতপত্তি বিষ্ণেtঃ । সমগ্র লোককে তোমার জলংবদনের দ্বারা গ্রাস করিতে করিতে লেহন করিতেছ— সমস্ত জগৎকে তেজের দ্বার পরিপূর্ণ করিয়া হে বিষ্ণু তোমার উগ্ৰজ্যোতি প্রতপ্ত হইতেছে। 象 হে, রুদ্র, তোমারই দুঃখরূপ, তোমারই মৃত্যুরূপ দেখিলে আমরা দুঃখ ও মৃত্যুর মোহ হইতে নিষ্কৃতি পাইয়া তোমাকেই লাভ করি। নতুর ভয়ে ভয়ে তোমার বিশ্বজগতে কাপুরুষের মতু সঙ্কুচিত হইয়াবেড়াইতে হয়—সত্যেরনিকট নিঃসংশয়ে আপনাকে সম্পূর্ণ সমর্পণ করিতে পারি না । তখন দয়াময় বলিয়া ভয়ে তোমার নিকটে দয়া চাহি—তোমার কাছে তোমারবিরুদ্ধে অভিযোগ আনি—তোমার হাত হইতে