পাতা:বঙ্গরহস্য - ভূবনচন্দ্র মুখোপাধ্যায়.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দূৰ্গাপূজা । কলিযুগের অশ্বমেধ-যজ্ঞ দুর্গোৎসব। সেই দুর্গোৎসবের দিন দিন কিরূপ পরিণাম হইয়া আদিয়াছে, তাহা দৰ্শন করিয়া দিন দিন আমরা পরিতপ্ত হইতেছি। বিংশতি বৎসর পূৰ্ব্বে দুর্গোৎসবে হিন্দু সন্তানের কিরূপ আমোদ ছিল, কিরূপ উৎসাহ ছিল, হিন্দুর হৃদয়-সাগরের আনন্দ-স্রোতের সহিত কিরূপ ভক্তিস্রোত প্রবাহিত হইত, তাহা যাহাঁদের মনে হয়, ভীহারা এখন বিষাদে অশ্রু-বিসর্জন করেন। দুর্গা-পূজার অশ্বমেধ-যজ্ঞেয় সে সাধুকভাব এখন আর প্রায়ই দৃষ্টি, গোচর হয় না ; সে ভাব এখন কেবল তামাসায় পরিণত হইয়াছে। দুর্গানাম করিতে করিতে লোকের মনে দুর্গ-নামের বিমলানন্দ সমুদিত হইত, আবাল-বুদ্ধবনিতা সকলেই দুর্গ-প্রেমে উৎফুল্প হইয়া উঠিত। বাহারা ভাগ্যবান, ভঁহাদের গৃহে গৃহে আনন্দময়ীর আনন্দময় নাম পূজার পূর্বে দুই মাস কাল মহানন্দে পরিকীৰ্ত্তিত হইত। প্ৰতিমার গঠন আরম্ভ হইলে বালক-বালিকার অবকাশ পাইলেই কারিকল্পগণের নিকটে বসিয়া আনন্দে বিভোয় হইয়া থাকিত, কোন কাৰ্য যেন তাহদের ভাল লাগিত না । এখন আর সে ভাব নাই, সে আনন্দ নাই, সে ভক্তি নাই, সৌন্দুৰ্ত্তিও নাই। দুর্গোৎসব আমাদের দেশে জাতীয় সাধারণ পর্ব। মুসলমানের হুর্গাপূজা করে না, কিন্তু হুর্গোৎসবের সময় হিন্দু, মুসলমান প্রভৃতি সৰ্ব্বজাতিই এক এক প্রকার অনুরাগে আনন্দ অনুভব করিয়া থাকে,হিন্দু-মুসলমােনাদি সকলেই নববস্ত্ৰাদি পরিধান করিয়া, মূৰ্ত্তি করিয়া বেড়ায়,